কামারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত
নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলাধীন বলাইশিমুল ইউনিয়নের কামারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভবনের ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপর। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে শ্রেণিকক্ষে। অকারনেই ঝরে পড়ে পলেস্তারার টুকরো।
স্কুল ভবনটির চারটি কক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র দুটিতে শ্রেণির কার্যক্রম চলে। একটি কক্ষ অফিস হিসেবে ব্যবহার হয়। পুরো ভবনটাই ঝুঁকিপূর্ণ। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ দ্বিতীয় শ্রেশি কক্ষ। এই কক্ষের ছাদে বেশ বড়সড় ফাটল ধরেছে।
উপজেলা প্রকৌশলী(এলজিইডি) কর্মকর্তাদের পরামর্শক্রমে বেশ কিছু দিন ধরে শ্রেণি কক্ষটিতে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। প্রথম শ্রেণি কক্ষেই এক সাথে দুটি আলাদা শ্রেণির পাঠদান করেন দুই শিক্ষক। এতে উভয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর পড়াতে মনোযোগ নষ্ট হয়।
বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন জেনেও এটা ব্যবহার হচ্ছে। শিক্ষক কিংবা অভিভাবক বা শিক্ষার্থী ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনটিকে নিয়ে আতঙ্কিত সবাই।
স্কুল সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামে ১৯৯২ সালে মুজিবুর রহমান তালুকদার এর ৩৩ শতাংশ জমির ওপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৯৯ সালে বিদ্যালয়ের জন্য চার কক্ষবিশিষ্ট একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি সরকারি হয়। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৮। শিক্ষক রয়েছেন চারজন।
গ্রামের ভেতরে অবস্থিত এই বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করলেই দেখা যায় বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে আস্তর উঠে যাচ্ছে।দেয়ালে বড় বড় ফাটল।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমা,ইমন,ইভা,সিয়াম, বাবর,মারিয়া জানায়, বিদ্যালয়ের ভবনটি পুরোনো হয়ে পড়েছে। স্কুল খোলা থাকা অবস্থায় শ্রেণিকক্ষে ছাদ থেকে সিমেন্ট ওঠে শরীরের ওপর পড়েছে অনেক সময়। এই ঝুঁকি নিয়ে ভয় হয় সবার। এই স্কুলে নতুন একটা ভবন প্রয়োজন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয় ভবনের অবস্থা মোটেও ভালো না। সিমেন্ট উঠে যাচ্ছে। দেয়াল ও ছাদের ফাটল গুলো দিন দিন বড় হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ভবনটি। একটা ভবন খুবই দরকার।
উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী সজল বিন রেজা জানান,আমাদের কাছে চিঠি আসার পর আমরা দেখতে যাই, বিদ্যালয় ভবনটি আসলেই খুব ঝুকিপূর্ণ। ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মির্জা মোহাম্মদ জানান, আমিও শোনেছি ভবনটি অনেক ঝুকিপূর্ণ।আমরা বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে যাব, যদি পরিত্যক্ত করার উপযোগী মনে হয় তা হলে পরিত্যক্ত করা হবে। আর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কায়সার তালুকদার