সেনা ও নৌবাহিনীর কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণা, পিবিআই’র অভিযানে গ্রেফতার
কখনও সেনাবাহিনীর লেফটেনেন্ট কখনও বিমান বাহিনীর সার্জেন্ট পরিচয় দিয়ে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতরণা করতেন মো. হাবিবুল্লাহ (৪০)। ভুয়া পরিচয়ে গ্রামের সহজ সরল মানুষকে চাকরির প্রলোভন দিয়ে টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান তিনি। প্রতারণার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়েছে।
অবশেষে রোববার (৩ ডিসেম্বর) ভোরে নেত্রকোনার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি দল সিলেট বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে। পরে বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
হাবিবুল্লাহ সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলারলক্ষিপুর গ্রামের আবদুল হকের ছেলে। নেত্রকোনার পিবিআই’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহীনূর কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহীনূর কবির জানান, হাবিবুল্লাহ নিজেকে কখনও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা কখনও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মানুয়ের সঙ্গে প্রতরণা করতেন। গত ৩০ জানুয়ারি বিমানবাহিনীর অফিসার পরিচয় দিয়ে নৌবাহিনীতে অফিস সহায়ক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে নেত্রকোনার আটপাড়া পাঁচজনের কাছ থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা নেন।
পরে বাগেরহাটের সরণখোলা উপজেলার তফালবাড়ী গ্রামের তার প্রথম স্ত্রীর বড় ভাই মহিবুল্লাহ, ছোট ভাই মহিউদ্দিনের মাধ্যমে খুলনায় সোনাডাঙ্গা বাইপাস এলাকায় চৌধুরী আবাসিক হোটেলে ইন্টারভিউয়ের নাটক সাজান। সেখানে নেত্রকোনার আটপাড়ার আরিফ খান, হাবিবুর রহমান, মো. ফরহাদ মিয়া, সৌরভ ও রাকিবের নৌবাহিনীতে অফিস সহায়ক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরির ভুয়া নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরে সেখানেই তাদের ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমানের বাবা আরাধন বিষয়টি বুঝতে পেরে গত ২৭ জুলাই নেত্রকোনা পিবিআইয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। পিবিআই প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এরই প্রেক্ষিতে আটপাড়া থানায় ২৭ জুলাই হাবিবুল্লাহর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয়। পরবর্তীতে একই থানায় ৩১ আগস্ট আরও দু’টি মামলা হয়। এদিকে হাবিবুল্লাহ আত্মগোপন করে।
তিনি আরও জানান, প্রতারক হাবিবুল্লাহকে ধরতে পিবিআইয়ের এসআই ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে খুলনা ও সিলেটে অভিযান চালায়। গোপন সংবাদে রোববার ভোরে সিলেট বাসস্ট্যান্ড থেকে হাবিবুল্লাহকে গ্রেফতার করে। হাবিবুল্লাহর দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে খুলনাসহ বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘদিন আত্মগোপন করেছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হাবিবুল্লাহ ৩০ লক্ষাধিক টাকা গ্রহণের কথা স্বীকার করেছে। পরে বিকেলে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
আরও পড়ুন: নেত্রকোনায় ডিবি’র অভিযানে ভারতীয় মদসহ এক মাদক ব্যবসায়ী আটক