ভোট করতে দেবে না, বিএনপি এত সাহস কোথায় পায়: শেখ হাসিনা
অগ্নিসন্ত্রাস করে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের জীবন কেড়ে নেবে, মানুষকে ভোট দিতে দেবে না, নির্বাচন বন্ধ করবে, এত সাহস কোথা থেকে পায়!
বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কুলাঙ্গার মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওই লন্ডনে বসে একটা কুলাঙ্গার হুকুম দেয় আর কতগুলো লোক নিয়ে এখানে আগুন নিয়ে খেলে।
আগুন নিয়ে খেলতে গেলে আগুনেই হাত পোড়ে এটা তাদের মনে রাখা উচিত। তারা মনে করেছে দুইটা আগুন দিলেই সরকার পড়ে যাবে। অত সহজ না। অত ভাত দুধ দিয়ে খায় না। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা লুটেরা, খুনি, হত্যাকারী, দুর্নীতিবাজ, এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী তারাই এদেশের মানুষকে আগুন দিয়ে পোড়ায়। নির্বাচন বানচাল করতে চায়। ’
বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘একটা অনুরোধ আপনাদের কাছে। সেটা হলো আজকে সমস্ত জায়গায়, বোমাবাজি, খুন আর অগ্নিসন্ত্রাস এবং আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারা এর বিরুদ্ধে সকলকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ’
নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী নির্বাচন নৌকা মার্কা; এই নৌকা নূহ নবীর নৌকা, এই নৌকায় কিন্তু মানবজাতিকে রক্ষা করেছিলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। এই নৌকায় ভোট দিয়ে এদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। আবার এই নৌকা যখন সরকারে এসেছে, নৌকা মার্কায় ভোট পেয়ে যখন আমরা সরকারে এসেছি বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে আমরা যাদের নৌকা মার্কার প্রার্থী দিয়েছি তাদেরকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। আপনাদের কাছে সেটাই আমার আহ্বান। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আছে জনগণের উন্নতি হচ্ছে। আজকে দারিদ্র মুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তোলা এটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমি কাজ করে যাচ্ছি। ’
সকাল থেকে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জড়ো হন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। হাতে লাল-সবুজ পতাকার সঙ্গে রঙিন পোশাক উৎসবের আমেজ তৈরি করে গোটা এলাকায়।
বেলা তিনটার দিকে ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে জনসভা মঞ্চে আসেন আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা। সভা মঞ্চে এসে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে জাতীয় পতাকা নেড়ে শুভেচ্ছা জানান শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা। এরপর আঞ্চলিক ভাষায় গান গেয়ে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানায় সিলেটবাসী।
জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জেবুন্নেছা হক, সিলেট সিটি মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, অভিনেত্রী তারিন প্রমুখ।
সভাপতিত্ব করেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ। সঞ্চালনা করেন জেলা ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান ও অধ্যাপক জাকির হোসেন। এর আগে দুপুরে সিলেটে হজরত শাহজালালের (র.) এবং হজরত শাহ পরান (র.) - এর মাজার জিয়ারত করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সিলেট থেকে দ্বাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রচার-প্রচারণা শুরু করেন শেখ হাসিনা। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি বরিশাল, গোপালগঞ্জ জেলা সফর করবেন। এছাড়া বেশ কয়েকটি জেলায় ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত হয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখবেন তিনি।
আগামী ২১ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় ও লালমনিরহাট, রাজশাহী বিভাগের নাটোর ও পাবনা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের খাগড়াছড়িতে ভার্চ্যুয়ালি নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
২৯ ডিসেম্বর বরিশাল সফরে যাবেন শেখ হাসিনা। এদিন বিকেল ৩টায় বরিশাল জেলা সদরে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এরপর আগামী ৩০ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলা সফর করবেন আওয়ামী লীগ প্রধান। এদিন গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া) আসন নিজের নির্বাচনী এলাকায় জনসভায় বক্তব্য দেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। এ ছাড়া এদিন মাদারীপুর-৩ আসনেও আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখবেন শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: এক ক্লিকেই তৈরি হবে নির্বাচনী ব্যানার