ঠাকুরগাঁওয়ে গ্রামগঞ্জে জ্বালানি চাহিদা পূরণ করছে গোবরের তৈরি করা লাকড়ি গৃহবধূরা
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা মোহাম্মাদপুর ইউনিয়ন জলপাইতলা এলাকায় গরুর গোবর সাধারণত জৈব সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এতে জমির উর্বর শক্তি বাড়ে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ, লাকড়িসহ রান্নার কাাজে ব্যবহৃত অন্যান্য জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় ঠাকুরগাঁও মোহাম্মদপুর এলাকার জলপাইতলার গৃহবধূরা গরুর গোবর থেকে জ্বালানি লাকরি তৈরি করছেন।
গ্রামের গৃহবধূরা বলছেন, জমিতে প্রয়োগের পর অবশিষ্ট গোবর দিয়ে আমরা জ্বালানি তৈরি করি। আমাদের চাষ করার মতো জমি নেই। তাই গৃহপালিত গরুর গোবর দিয়ে জ্বালানি তৈরি করি। বাড়িতে গ্যাস বা বিদ্যুৎ না থাকলে এসব জ্বালানি হিসেবে রান্না-বান্নার কাজে ব্যবহার করা যায়।
মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা শ্রী মতী নেন্দুবালা বলেন, আমাদের দুটি গাভী আছে। কিন্তু চাষ করার জমি নেই। তাই গোবরগুলো দিয়ে জ্বালানি তৈরি করি। প্রতিদিন সকালে গোয়ালঘর পরিষ্কার করি। গোবরগুলো একত্রিত করে পাশের দেওয়ালে হাতের ছাপের মতো করে লাগিয়ে রাখি। রোদ ভালো হলে দুই থেকে তিন দিনে শুকিয়ে যায়। পরে চুলায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করি। জ্বলেও ভালো।
মাস্টার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা আকলিমা খাতুন বলেন, আমার স্বামী ছোট দিন মজুর কোনো মতে সংসার চালায়। রান্নার জন্য জ্বালানি কিনতে গেলে আর্থিক সমস্যা হয়। তাই সমিতি থেকে ঋন নিয়ে একটি গাভী কিনি। একটি বাছুর দিয়েছে। প্রতিদিন সকালে গোয়ালঘর থেকে গরুর গোবর তুলে কাঠিতে পেচিয়ে রোদে শুকাতে দেই। আবহাওয়া ভালো থাকলে ৩ থেকে ৪ দিনে শুকিয়ে যায়। তা দিয়ে রান্নার কাজ করি। পাশাপাশি বাড়ির পাশে থেকে গাছের পাতা কুড়িয়ে রান্না-বান্নার কাজ সারতে হয়।
আকচা ইউনিয়ন লোকায়ন জাদুঘর এলাকার সাধুরিয়া গ্রামের তহমিনা আক্তার বলেন, আমরা গ্রামের মানুষ, বিদ্যুৎ আছে কিন্তু গ্যাস নেই। স্বামী গৃহস্থ। সামান্য জমি আছে। নিজেই চাষ করে। আর বাড়িতে ৪টি গরু আছে। জমিতে গোবর প্রয়োগের পর অবশিষ্ট গোবর মাঠে শুকিয়ে জ্বালানি বানাই। শুকনা মৌসুমে ডাল-পাতা কুড়িয়ে রান্নার কাজ সারি। আর গোবর থেকে তৈরি এসব জ্বালানি বর্ষার জন্য মজুদ রাখি। তখন রান্নার কাজে ব্যবহার করি।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুরে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীতা ঘোষণা
আব্দুল আউয়াল