
কলমাকান্দায় ধানের জালা ক্ষেতের সাথে এ কেমন শত্রুতা ?
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় আমন ধানের বীজতলা জমিতে বিষ প্রয়োগ করে বিনষ্ট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কলমাকান্দা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগী কৃষক আশরাফুল আলম।
গতকাল শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করে কলমাকান্দা থানার ওসি আবুল কালাম (পিপিএম) বলেন, গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। দোষীদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ।
এ ঘটনাটি ঘটে উপজেলার লেংঙ্গুরা ইউনিয়নের দক্ষিণ গোড়াগাঁও গ্রামের সাজ্জাদুর রহমান (সাজু) মোড়লের ছেলে আশরাফুল আলমের বীজতলা জমিতে।
অভিযুক্তরা হচ্ছেন,একই গ্রামের আশরাফুল আলমের চাচা খোরশেদ আলম ও মো. নূরুল ইসলামসহ ছয়জন।
আশরাফুল আলমের লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, চাচা খোরশেদ আলম ও নুরুল ইসলামের সাথে জমি নিয়ে পারিবারিক বিরোধ ও মামলা চলছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় নানাভাবে হুমকি- ধমকি দিয়ে আসছিল দুই চাচা । এর জেরে গত বুধবার সকালে ১ একর .৬০ শতাংশ আমন বীজতলা জমিতে দুই চাচা তাদের লোকজন নিয়ে স্প্রে করে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে ধানের চারা মেরে ফেলছিলেন। এ সময় বাঁধা দিলে তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আশরাফুল আলমকে ধাওয়া দেয় ও পুরো জমিতে বিষ প্রয়োগ করে। এ অবস্থায় আমন ধানের চারা হলদে রং হয়ে ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে।
আশরাফুল আলম আরো জানান , পরিবারের সকলে মিলে চেষ্টা করেও রক্ষা করতে পারিনি ধান চারা। প্রায় ত্রিশ একর জমিতে আমন ধান চাষ করতে এই বীজতলা করেছিলাম। এতে প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ হয়। এই মুহূর্তে জমিতে আমন ধান রোপন করতে পারবো না। হাতে টাকা নেই। চারা কেনা সম্ভব না। পুরো ত্রিশ একর আমনের জমি পতিত থাকবে। আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। আমাদের সাথে শত্রুতা ছিল তাদের। ধানের চারার সাথেতো তাদের শত্রুতা ছিল না। আমার ন্যায় বিচার চাই বলেন তিনি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত খোরশেদ আলমের নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমাদের সাথে জমি ওয়ারিশ নিয়ে ভাই সাজ্জাদুর রহমান (সাজু মড়ল) সাথে প্রায় ৫ বছর ধরে মামলা ও মোকদ্দমা চলছে। পরিকল্পিভাবে ষড়যন্ত্র করে বীজতলা তারা নিজেরাই বিনষ্ট করে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। আশা করছি তদন্তে প্রকৃত সত্য ঘটনা উদঘাটন হবে। আমরা ন্যায় বিচার চাই।
একই এলাকার বাসিন্দা ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান ভূইয়া বলেন, আমাকে কেউই জানায়নি। তবে তাদের মধ্যে জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিরোধ আছে ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে বীজতলা জমিতে গাছ মারার আগাছানাশক জাতীয় বিষ প্রয়োগ করে আমন ধান চারা বিনষ্ট করা হয়েছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা সরেজমিনে যাবো।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা কলমাকান্দা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আশিকুর রহমান জানান, ধানের বীজতলা জমিতে বিষ প্রয়োগ করে বিনষ্ট করার অভিযোগ প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেছে। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন: হাইনি, একটি রোবটিক রচনা