
দিলবাহার খান
সঙ্গীতের উপর উচ্চশিক্ষা লাভকারী দিলবাহার খান। পিতামৃত আব্দুছ ছামাদ খান, মাতাঃনূর জাহান আক্তার। তিনি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের ব্রাহ্মনজাত গ্রামে ১৯৬৪ ইং সনের ৩ ফেব্রুয়ারী সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন।
কি মোবাইল বানাইছ দয়াল সীমের মালিক তুমি/উল্টাপাল্টা কল করিয়া কার্ড ফুরাইছি আমি-জনপ্রিয় এ গানের রচয়িতা দিলবাহার খানের সঙ্গে কিছুদিন পূর্বে বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়।
তিনি জানান, ছোট বেলাতেই গানের প্রতি মোহ সৃষ্টি হয় পিতার মাধ্যমে। পিতার কাছেই প্রথম সংগীতে হাতেকড়ি। তারপর স্কুল জীবনে বর্তমান জয়হরি স্প্রাই সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সঙ্গীতের গুরু গোলাম মোস্তফা(প্রয়াত) স্যারের মাধ্যমে ১৯৭৭ ইং সনে প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আবু সাদেক স্যারের নির্দেশনায় কাজী নজরুল ইসলামের ইসলামিক গান নিয়ে মঞ্চে প্রথম আগমন ঘটে।
১৯৮৮ ইং সনে ঢাকায় অবস্থান করে বিভিন্ন গুনী শিল্পীর সান্নিধ্য লাভ করেন এবং তালিম নেন ওস্তাদ বিপ্লব দে, ফয়সাল আহমেদ, ডাঃ হারুন-অর-রশিদ, অনীল সাহা, আজাদ রহমান, ফেরদৌস ওয়াহিদ, মলয় কুমার গাঙ্গুলী এবং তানসেন রহমান।
জনপ্রিয় এই শিল্পী এক সময় গান রচনা শুরু করেন। শ্রোতানন্দিত গান “কি মোবাইল বানাইছ দয়াল, বধূঁ কই রইলারে, কত রঙ্গের খেলছ খেলা/সিডর না হয় আইলা/জলবায়ুর পরিবর্তন তুমিই তো দেখাইলা, বেশী কথা বলে রে মন নিষেধ মানে না/খাই খাই করে দিন কাটাইলাম মনরে আর কথা বলিস না অযথা, বিধিরে আমার একটা নতুন কইরা কন্ট্রাক ফরম দাও/যে কন্ট্রাক্ট্রের ডেইট এক্রাফায়ার আছে কি আর তারই দরকার/শুনানীর ডেইট দাও, আইয়ো আইয়ো রে বন্ধু হাওয়াই গাড়ী দিয়া/যাইবার বেলায় যাইয়ো বন্ধু টম টম গাড়ী দিয়া ইত্যাদি ৭০-৭৫টি গান রচনা ও সুর করেছেন।
২০০১ ইং সনে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রথম সংগীত পরিবেশন করেন। তিনি বেতার ও টেলিভিশনের বিশেষ তালিকাভুক্ত শিল্পী। এছাড়াও বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। দিলবাহার খান জানান, ঢাকা শান্তা মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয় হতে ২০০৭-০৮ শিক্ষা বর্ষে উচ্চাংগ সঙ্গীতে (এম নিউজ) মাষ্টারস্ ডিগ্রী অর্জন করেন। তবে লোকজ ধারার গান যেমন-গনসঙ্গীত, লোক সঙ্গীত, বাউল, ভাটিয়ালী, বিচ্ছেদী এবং নেত্রকোনার আঞ্চলিক গানেই বেশী গেয়ে থাকেন। মৈময়নসিংহ গীতিকার পালা সমূহ নিয়ে বর্তমানে তিনি গানের কাজ করছেন।
তিনি গান ঘর নামে একটি সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। তার ইচ্ছা কেন্দুয়ার তথা নেত্রকোনা অঞ্চলের লোক সঙ্গীতকে বিশ্বের সঙ্গীত দরবারে পৌঁছে দেয়া। স্থানীয় ঝংকার শিল্পী গোষ্ঠীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিলবাহার খান আরোও বলেন, যতদিন বেঁচে থাকবো লোক সঙ্গীতকে হৃদয়ে ধারন করেই বেঁচে থাকতে চাই। জীবনে সঙ্গীত প্রেমিদের যে ভালবাসা পেয়েছি তা আমার চলার পথের পাথেয়।
আরও পড়ুন: গীতিকবি মির্জা রফিকুল হাসানের জীবনচিত্র