
আগুন দিতে গিয়ে ধরা পড়লে, ওই আগুনেই তাকে ফেলতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কেউ আগুন দিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লে ওই আগুনেই তাঁকে ফেলতে হবে। যে হাত দিয়ে আগুন দেবে সেই হাত পুড়িয়ে দিতে হবে। আজ শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী যে যেখানে আছে, আমাদের সহযোগী সংগঠন, সবাইকে যার যার এলাকায়... সবাইকে এমনভাবে সংগঠিত হতে হবে যেন ওই অবরোধ আর অগ্নি-সন্ত্রাস করে একটাও পার না পায়। আর যদি কোনোটা আগুন দিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে, ওইটাকে ধরে সঙ্গে সঙ্গে ওই আগুনেই তারে ফেলতে হবে আর হাত পুড়িয়ে দিতে হবে। যে হাত দিয়ে আগুন দেবে ওই হাতই পোড়াতে হবে। তাহলেই তারা সিধা হবে, তা না হলে এরা সিধা হবে না। কারণ যে যেমন তারে তেমন করতে হয়। যেমন কুকুর তেমন মুগুর দিতে হয়। তখন ওদের শিক্ষা হবে।’
বিএনপির অগ্নি-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষকে নেতা-কর্মীদের প্রতিবাদ করার নির্দেশনা দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী। আমরা জাতির পিতা, জাতীয় চার নেতা এবং পরিবারের সব হারিয়েছি। কিন্তু একটা কারণে তো আমাদের রাজনীতি, যে আদর্শ নিয়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বর ঘটিয়ে তারা ভেবেছিল যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ হয়েছিল সেখান থেকে বিচ্যুত করবে। সেটা পারেনি। আজকে বাংলাদেশ উঠে এসেছে সারা বিশ্বে মর্যাদার আসন নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। সেটাকে তারা ধ্বংস করতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘ওদের চক্রান্ত হচ্ছে নির্বাচনটা বানচাল করা। এই নির্বাচন বানচাল করার পেছনে অনেকেরই হাত আছে। কিন্তু আমাদের শক্তি জনগণ, বাংলাদেশের মানুষ। ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ে আন্দোলন করে অনেক অত্যাচার, জেলজুলুম সহ্য করে বারবার মৃত্যুর মুখে গেছি। সবকিছু অতিক্রম করেই বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি। আজকে ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছি। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ, সেইভাবে যেন এগিয়ে যেতে পারে।’
মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ গড়ে উঠবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েকজন দুষ্কৃতকারীর লাফালাফিতে এ দেশে কখনো নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না। এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচনে নানাভাবে গোলমাল করার চেষ্টা করবে। আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতা–কর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। অনেক সংগ্রামের মাধ্যমে মানুষের ভোটের অধিকার আদায় করেছি, সেই অধিকার যাতে নিশ্চিত থাকে, মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারে সেই পরিবেশ রাখতে হবে।
সিট পাবে না ভেবে বিএনপি নির্বাচন করবে কি না সন্দেহ। আর নির্বাচনে আসলেও আসবে মনোনয়ন বাণিজ্য করার জন্য। সেই ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা নেতা-কর্মীকে... মনোনয়ন আমরা দেব, আমি বসে থাকি না। প্রতি ছয় মাস পরপর আমার একটা হিসাব থাকে। কেউ যদি আবার মনে করে, ও এখন তো ওরা (বিএনপি) নাই দাঁড়ালেই জিতে যাব। একটা সিট না পেলে কী হবে? বাকি সিট তো পাবে, সরকার গঠন করবে। এই চিন্তা যেন কারও মাথায় না থাকে। এই চিন্তায় সর্বনাশ ডেকে আনবে। কাজেই যে সিদ্ধান্ত দেব সেটা মানতে হবে।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘অগ্নি-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। শুধু ঢাকায় না, প্রত্যেক এলাকায়। যেখানে যেখানে তারা অগ্নি-সন্ত্রাস করবে। সেই এলাকায় কত বিএনপি-জামায়াত আছে খুঁজে বের করতে হবে। ওগুলোকে ধরিয়ে দিতে হবে। আর মানুষের জানমালের ক্ষতি করতে না পারে, তাদেরকে সুরক্ষা দিতে হবে। এটা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব। কারণ আমাদের আর কিছু নাই, আমাদের কোনো মুরব্বি নাই। আমাদের আছে বাংলাদেশের জনগণ। সেই জনগণ নিয়েই আমাদের চলতে হবে।’
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুল আউয়াল শামীমের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সিমিন হোসেন রিমি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কার্যনির্বাহী সদস্য মুশফিক হোসেন চৌধুরী, সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: কেন্দুয়ায় একপক্ষের মাছ নিধনের অভিযোগের পর অপরপক্ষের হাঁস নিধনের অভিযোগ