![বিজিবি’র ১০০তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত বিজিবি’র ১০০তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত](https://www.durjoybangla.com/media/imgAll/2023November/The-closing-parade-of-the-100th-recruit-batch-of-BGB-was-held-2312061239.jpg)
বিজিবি’র ১০০তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ শেষে ক্রেস্ট তুলে দিচ্ছেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর ১০০তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে অবস্থিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর ঐতিহ্যবাহী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজ (বিজিটিসিএন্ডসি)-এর বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে এই সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান, বিএএম, এনডিসি, পিএসসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নবীন সৈনিকদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন।
এসময় বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বিজিবি মহাপরিচালককে সশস্ত্র সালাম প্রদানের মধ্য দিয়ে নবীন সৈনিকদের শপথ গ্রহণ ও প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ শেষে বিজিবি মহাপরিচালক নবীন সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনামূলক ভাষণ প্রদান করেন। ভাষণের শুরুতে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবসহ ৭৫ এর ১৫ আগস্ট শাহাদতবরণকারী তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
একইসাথে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল বীর শহীদসহ বিজিবির জীবন উৎসর্গকারী দুজন বীরশ্রেষ্ঠ, আটজন বীর উত্তম, ৩২ জন বীর বিক্রম এবং ৭৭ জন বীর প্রতীকসহ ৮১৭ জন অকুতোভয় বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ১৯৭৪ সালের ৫ই ডিসেম্বর পিলখানায় অনুষ্ঠিত এই বাহিনীর তৃতীয় রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেছিলেন এবং বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে ভবিষ্যতের দিক নির্দেশনামূলক ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই একই দিনে অদ্য ৫ই ডিসেম্বর তারিখে বাহিনীর ১০০তম রিক্রুট ব্যাচের passing Out প্যারেড অনুষ্ঠিত হওয়ায় আজকের দিনটি সবার জন্য অত্যন্ত স্মরণীয় ও মর্যাদাপূর্ণ।
বিজিবি মহাপরিচালক আরও বলেন, কিংবদন্তির মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এই বাহিনী সাফল্যের পথ পরিক্রমায় আজ একটি সুসংগঠিত, চৌকস, সুশৃঙ্খল ও পেশাদার দেশপ্রেমিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। বিজিবি ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে বাংলাদেশের ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি সীমান্তে চোরাচালান ও মাদক পাচাররোধ, নারী ও শিশু পাচারসহ যেকোনো আন্ত:সীমান্ত অপরাধ দমনে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। স্বাধীনতার পর দেশ গঠন এবং দেশ মাতৃকার সেবায় এ বাহিনীর সদস্যরা গুরুদায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরে যেকোন দুর্যোগময় মুহুর্তে জনগণের সেবায় তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং সাধারণ মানুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছে। অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং অসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রেও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ভূমিকা সর্বজনবিদিত।
এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে বিশ্বস্ততা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে বিজিবি আজ সকলের আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, বিজিবির ১০০তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ গত ১৮ জুন ২০২৩ তারিখে বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজ (বিজিটিসিএন্ডসি)-তে শুরু হয়। প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে সর্বমোট ৫৮২ জন রিক্রুটের মধ্যে ৫৪৪ জন পুরুষ এবং ৩৮ জন নারী রিক্রুট মৌলিক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছে। দীর্ঘ ২৪ সপ্তাহের অত্যন্ত কঠোর ও কষ্টসাধ্য এ প্রশিক্ষণ সফলভাবে শেষ করে আজ আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ ও সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে তাদের সৈনিক জীবনের শুভ সূচনা হলো।