
কেন্দুয়ায় ২০ ঘন্টা ব্যবধানে দুই শিশু পুকুরের পানিতে ডুবে মৃত্যু
কতটা ওজন হলে পাহাড়ের চেয়েও ভারী হতে পারে সন্তানের লাশ! এক নিদারুণ করুণ হৃদয় বিদারক দৃশ্য। ছোট্ট শিশু এখনো যে শিশুটি ভালভাবে পিতা-মাতাকে আব্বা-আম্মা বলে ডাকতেই পারেনা। যে শিশু কিনা হামাগুড়ি দিয়ে পা পা করে গুটিকয়েক হাঁটতে পারে, সে শিশুটি বাড়ির সামনে ঘরের সংলগ্ন পুকুরে অসাবধানতা বশতঃ একাকী পুকুরের ঘাট দিয়ে নেমে পানিতে ডুবে মারা যায়। পিতা-মাতা তাদের সন্তানকে পুকুরে ডুবে মৃত্যু ঘটনা দেখে নির্বাক হয়ে যায়। পরিবারে চলছে শোকের মাতন।
নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় হামাগুড়ির ছলে খেলা করতে গিয়ে ২০ ঘন্টা ব্যবধানে ২ অবুজ শিশু পুকুরের পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় রোয়াইলবাড়ি- আমতলা ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের শাহজাহান মিয়ার শিশুপুত্র মনিরুল ইসলাম (২ বছর) ও চিরাং ইউনিয়নের দুল্লী গ্রামের স্বপন মিয়ার শিশুকন্যা নাবিলা আক্তার (১৫ মাস) নামে দুই শিশু পুকুরে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনাটি দুটি ঘটে বৃহস্পতিবার (১৭ আগষ্ট ) দুপুরে ও শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সকালে।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরের শিশু মনিরুল খেলা করার জন্য হামাগুঁড়ি দিয়ে আস্তে আস্তে ঘরের বাহিরেে যায়। শিশুপুত্র খেলা করতে করতে সবার অগোচরে বাড়ির পাশের পুকুরে ডুবে যায়। পরে আত্মীয়-স্বজন তাকে খোঁজাখুঁজির পর লাশ পুকুরে পানিতে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পায়। পরে তাকে উদ্ধার করে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে শুক্রবার (১৮আগস্ট) সকালে শিশুকন্যা নাভিলা হামাগুঁড়ি শেখার ছলে ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির উঠানে খেলা করছিল। তার মাসহ পরিবারের লোকজন তাকে খুঁজতে গিয়ে বাড়ির পূর্বপার্শে পুকুরের পানিতে শিশুকন্যা নাভিলার লাশ ভেসে থাকা অবস্থায় দেখতে পায়। পরে তাকে উদ্ধার করে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্য চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলার সান্দিকোনা ইউপি সদস্য কাজল মিয়া ও চিরাং ইউনিয়ন সদস্য মিজানুর রহমান মিন্টু বলেন, হরিপুর গ্রামের শাহজাহান মিয়ার শিশুপুত্র মনিরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (১৭ আগষ্ট) দুপুরে পুকুরের পানিতে ডুবে মারা গেছে এবং উপজেলার দুল্লী গ্রামের শাহজাহান মিয়ার শিশুকন্যা নাবিলা শুক্রবার সকালে বাড়ির উঠানে খেলা করতে গিয়ে সবার অগোচরে বাড়ির পাশের পুকুরে ডুবে মারা গিয়াছে। যা খুবই দু:খজনক এবং মর্মান্তিক।
কেন্দুয়া থানার উপপুলিশ পরিদর্শক আলিমুর রাজি ও তানভির মেহেদি পুকুরে ডুবে শিশুপুত্র মনিরুল ইসলাম ও শিশুকন্যা নাবিলার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কোন অভিযোগ না থাকায় পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কেন্দুয়া থানায় পৃথক দুটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কেন্দুয়া-আটপাড়া আসনের সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল দুই পরিবারের ২ জন অবুজ শিশু পুকুরের পানিতে ডুবে মৃত্যু হওয়ায় পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানায়।
আরও পড়ুন: খালিয়াজুরীতে হাওরের পানিতে ডুবে ৫ বছরের শিশুর মৃত্যু