দুর্গাপুরে এম্বুলেন্স চালকের সাথে ভাড়া নিয়ে তর্কাতর্কি প্রাণ গেল নব-জাতকের
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রেফার্ড করা নবজাতককে ময়মনসিংহ নিয়ে যাওয়ার আগেই মারা গেল সদ্য ভূমিষ্ট নবজাতক শিশু। পিতার অভিযোগ সরকারী অ্যাম্বুলেন্স অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে চালকের সাথে দর কষাকষি করে সময় ক্ষেপনের পর দেখেন তার নবজাতক সন্তান আর বেঁচে নেই। এমন ঘটনায় বিচার দাবী করেন বাবা সহ পরিবারের সবাই।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দ্বিতীয় সন্তান প্রসব করেন কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের দেলোয়ারা গ্রামের হতদরিদ্র, দিনমজুর মোঃ মনির মিয়ার স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার। পরে ৯:৩০ পর্যন্ত হাসপাতালে ডাক্তারদের পর্যবেক্ষণে থাকে মা ও নবজাতক শিশু তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রসব হওয়ায় নানা সমস্যার কথা উল্লেখ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য নব-জাতককে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল বা নেত্রকোনা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন চিকিৎসকরা।
পরে রাত দশটায় সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক শাহাদাত হোসেনকে ফোন দিয়ে যোগাযোগ করেন রোগীর স্বজনরা। সরকার নির্ধারিত ভাড়া ১২৫০ টাকা থাকলেও চালক ২৫০০ টাকা দাবী করায় রাত বারোটা পর্যন্ত চলে ভাড়া নিয়ে দর কষাকষি। পরে ১৭০০ টাকায় নবজাতককে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজি হলেও ততক্ষনে নবজাতক শিশুটি মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন দ্বায়িত্বরত চিকিৎসকরা।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, সরকারি এম্বুলেন্সের চালক না থাকায় এবং শাহাদাত হোসেন সরকারি এম্বুলেন্সের চালক না হয়েও সরকারি এম্বুলেন্সটি চালানোর কারণে মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগে প্রতিনিয়ত তার ইচ্ছামত ভাড়া আদায় করে থাকেন। আজ তার অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের চেষ্টা করে সময় নষ্ট করার কারনেই নবজাতক শিশুটিকে আমরা হারিয়েছি। সময়মত উন্নত চিকিৎসা দিতে পারলে হয়তো শিশুটিকে বাঁচানো যেতো। আমরা এই মৃত্যুকে এক প্রকার খুন হিসেবেই দেখছি তাই শাহাদাত হোসেনের বিচার দাবি করছি।
এদিকে এম্বুলেন্স চালক শাহাদাত হোসেন অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে দর কষাকষির বিষয়টি সাংবাদিক দের নিকট স্বীকার করে জানান তিনি সরকারি এম্বুলেন্স চালক নন আসলে তিনি দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মোছাম্মৎ জেবুন্নেসার জিপ গাড়ির চালক তারপরেও অ্যম্বুলেন্স চালান। একপর্যায়ে সাংবাদিক দের প্রশ্নের উত্তর দিতে না পেরে দুর্গাপুরে সরকারি এম্বুলেন্স সেবা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে সাংবাদিকদের সামনে থেকে পালিয়ে যান।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মোছাম্মৎ জেবুন্নেসার বলেন,বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।
আরও পড়ুন: শপথ নিলেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা