শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

দুর্জয় বাংলা || Durjoy Bangla

নির্বাণে আমার কী লাভ হলো মিনারা?

মুক্তগদ্য

প্রকাশিত: ২০:৫২, ২ মে ২০২৩

নির্বাণে আমার কী লাভ হলো মিনারা?

পার্থ প্রতিম নাথ

কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প, উখিয়া কক্সবাজার, বাংলাদেশ। প্রতিবেশী মায়ানমারে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা মুসলমানেরা আশ্রয় নিয়েছে এ ক্যাম্পে। তের বছর বয়সী কিশোরী মিনারা গতকাল আশ্রয় পেয়েছে এ ক্যাম্পে। বাবা-মা, ছোট ভাইকে হারিয়ে অনেক নির্যাতন সয়ে জনস্রোতের তরঙ্গে ভেসে এসেছে মিনারা

আর দশজন শরনার্থীর সাথে একটি চালার নিচে ঠাঁই পেয়েছে অনাথিনি। দেশি বিদেশি দয়াল বাবাদের খয়রাতে কাপড় ও খাবার পেয়েছে। চরম বিপদে অযাচিত হাতের অত্যাচারও সইতে হয়েছে এ কিশোরীকে। দ্বিতীয় রাতের অত্যাচার থেকে বাঁচতে খুপড়ির বাহিরে এসেছে মিনারা। খুপড়ির বাহির মানে আরেক খুপড়ির শুরু, মাঝখানে সামান্য দুই পা পরিমাণ জায়গা। নিকষ কালো অন্ধকার। মনে হয় অমাবস্যা। মিনারার জীবনটাই এখন ঘোর অমানিশা। হঠাৎ পিঠে হাতের স্পর্শ মিনারাকে চকিত করে। কে ? গতরাতের বয়স্ক হাতটা ভেবে ভয় পায় মিনারা।

ভয় পেয়ো না মা। আমি বুদ্ধ । গৌতম, সিদ্ধার্থ, শাক্যমুণি তথাগত কত নামেই মানুষ আমাকে জানে। আর তুমিতো আমাকে জানবেই। তুমাকে অনাথ করে ঘরছাড়া যারা করেছে তারা আমারই নাম ভাঙ্গিয়ে এই কুকর্ম করছে। তুমি আমাকে ঘৃণা করতে পার। তবে তুমার কাছে আমার জমানো অনেকগুলো কথা বলার রয়েছে। আমি মহাপরিনির্বাণ লাভ করেও মুক্তি পাচ্ছি না। আমার কথা শুনে তুমি আমাকে ক্ষমা করবে কিনা জানি না। তবে তুমার দুঃখ লাঘব হবে। 

শোন মা , আমি জন্মেছিলাম রাজা শুদ্ধোধনের ঘরে। মা মায়াদেবী আমার জন্মের সাতদিনের মাথায় মারা গেলেও আমার কষ্ট হয়নি। বিমাতা মহাপ্রজাপতি আমাকে লালন পালন করেছেন অপার স্নেহে। আমার বাবা আমার আরাম আয়েশের কোন ঘাটতি রাখেননি। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা প্রতিটি আলাদা ঋতুর জন্যে আলাদা ঘর বানিয়ে দিয়েছিলেন যাতে আমি কষ্ট না পাই। সুন্দরী যশোধরার সঙ্গে আমার বিয়ে দিয়েছিলেন যাতে আমি সুখী পরিবার গঠন করি। রাহুল নামে আমার পুত্রেরও জন্ম হয়। কিন্তু আমি কোথাও সুখ খোঁজে পেলাম না। চারিদিকে দুঃখ আর দুঃখ। এই তুমি যেমন দুঃখের সাগরে আছ। বঙ্গোপসাগরের জলরাশি তুমার দুঃখের কাছে তুচ্ছ। আমি যখনই জানতে পারলাম জন্মে দুঃখ, জরায় দুঃখ, মরণে দুঃখ, অপ্রিয়ের সাথে সংযোগে দুঃখ, প্রিয়ের সাথে বিয়োগে দুঃখ অর্থ্যাৎ রূপ, বেদনা, সংজ্ঞা, সংস্কার ও বিজ্ঞান সকল উপাদানেই দুঃখ তখনই আমি ঘর ছাড়লাম। দুঃখ থেকে পরিত্রাণের উপায় জানার জন্যে কত বিদ্বানের কাছে গেলাম। কেউ আমাকে সঠিক উপায় বলতে পারল না। তাই আমি অধ্যয়ন ছেড়ে সিদ্ধি লাভের চেষ্টা করলাম। কঠোর তপস্যা করে সফল হলাম। নির্বাণ লাভে আমার দুঃখ, জরা দূর হল। আমি অমৃতের সন্ধান পেলাম।

আমি বোধিলাভ করার পর যে জ্ঞান ও আনন্দ লাভ করলাম তার স্বাদ অন্যকে দিব কি না সে বিষয়ে সংশয়ে পড়ে গেলাম। আমি ভাবলাম আমি যে জ্ঞান লাভ করেছি তা অতি গম্ভীর, অতি জটিল, অতি কঠিন। প্রকৃত জ্ঞানী ব্যাতীত অন্যে তার মর্ম বুঝতে পারবে না। আমার প্রাপ্ত বোধ সংসার ধর্মের সম্পূর্ণ বিপরীত বলে লোকে উপহাস করবে ভেবে তা আর প্রচার না করার সিদ্ধান্ত নিলাম। কিন্তু এতে মন মানল না। ভাবলাম আমার লব্ধ জ্ঞান প্রচার করলে তা যে একেবারে জলে যাবে তা নয়। আমি সংসারের মানুষকে তিনভাগে ভাগ করলাম। প্রথমত, একভাগ লোক সংসারে অজ্ঞানের মধ্যেই আছে। তাদের কাছে সত্য প্রচারের কোন অর্থই নেই। কারণ এরা চিরকাল অজ্ঞানের মধ্যেই থাকবে। দ্বিতীয়ভাগ নিজেদের জ্ঞানী ভাবে। তারা মনে করে তাদের প্রচুর জ্ঞান লাভ হয়েছে, আর জ্ঞানের প্রয়োজন নেই। এদের কাছেও তার সত্য প্রচার কোন কাজে লাগবে না। তৃতীয় ভাগের লোক যারা জ্ঞান ও অজ্ঞানের মধ্যবর্তী অবস্থায় সংশয়ের মধ্যে রয়েছে অথচ তারা জ্ঞান লাভের ইচ্ছা করে। ভাবলাম এই তৃতীয়ভাগের লোক যারা জ্ঞান পেতে চায়, জ্ঞান পেতে পারে তাদের জন্য আমার সত্য প্রচার করা দরকার।

এই সত্য প্রচার করতে গিয়ে দেখ আজ আমার এ অবস্থা। আমি দর্শনের উপরে ধর্মের স্থান দিয়েছিলাম। আমি তাদের ধর্মের শরণে আসার কথা বলেছিলাম। তারা ধর্মের স্থলে আমার নাম জুড়ে দিল। বুদ্ধনং শরনম্। আমি তাদের ভগবান সম্পর্কে কোন কথাই বলিনি। আমি ধর্মের কথা বলেছি। বলেছিলাম ধর্ম শুধু তর্ক বা বিচারের বস্তু নহে, ইহা অভ্যাস ওব্যবহারের বস্তু। ধর্ম অভ্যাস করতে হলে পাঁচ ব্রত গ্রহণ করতে হয়।

জীব হিংসা না করা।

অদত্ত গ্রহণ না করা।

অবৈধ ইন্দ্রিয়সেবা না করা।

অসত্য না বলা।

মাদক দ্রব্য ব্যবহার না করা।

মিনারা, তুমিই বল বৌদ্ধরা পাঁচ ব্রতের কোনটি পালন করছে ? কিরূপ জঘন্যতম প্রতিহিংসার শিকার তুমি, তুমার পরিবার পরিজন। এদের তুমি বৌদ্ধ বলতে পার ? অনুসারীদের সংখ্যা যখন বাড়ছিল তখনই আামি ভিক্ষুদের মধ্যে হিংসা প্রবৃত্তি দেখতে পেয়েছিলাম। তপস্যা শেষে লজ্জা নিবারণ করতে শ্মশান থেকে মৃত ব্যক্তির পরিত্যাক্ত কাপড় ছিঁড়ে চীবর বানিয়েছিলাম। আজ চীবরের বাহার দেখ। চীবর দানের অনুষ্ঠানের বাহুল্য দেখ। বর্ষাকালে জীব-জন্তু, পোকা-মাকড় বেশি করে বংশবৃদ্ধি করত। আমার হাঁটাচলায় তাদের ক্ষতি হতে পারে তাই আমি বর্ষাকালে ধর্মপ্রচার স্থগিত রাখতাম। আমার ভিক্ষুরা ধর্মের দোহাই দিয়ে মানুষ হত্যা করছে। অবশ্য আমার জীবদ্দশাতেই আমি এই অশনি সংকেত পেয়েছিলাম। আমার ভক্ত সুপ্রিয়ার ধর্মভীরুতার সুযোগ নিয়ে তার উরুর মাংস দিয়ে স্যুপ খেয়েছিল আরেক ভিক্ষু অজ্ঞানতাবশতঃ। তার কারণও আমি । বড় আক্ষেপ হয়, ভিক্ষু পিলিন্দি বচ্ছের বাতের অসুখের সময় শল্যচিকিৎসার পাশাপাশি মাংসের স্যুপ খাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলাম।

শেষপর্য্ন্ত ভিক্ষুরা তিন শর্তে মাংস ভোজনকে হালাল বানিয়ে নিল। আমার বাণী বানিয়ে পুস্তিকায় জুড়ে দিল, “ তুমরা জ্ঞাতসারে তুমাদের জন্যে নিহত পশুর মাংস খাইও না, তুমরা মারিতে দেখ নাই, শুন নাই ও তুমাদের জন্যে মারা হইয়াছে এরূপ সন্দেহ কর নাই এই তিনটি শর্ত পূরণ হইলে তবে তুমরা মৎস্যও মাংস খাইতে পার। এর বহু আগে আমার শিষ্যরা অসুখ হলে মদ খেতে পারবে এমন লাইসেনস ও নিয়ে রেখেছিল। ভেবে দেখ মিনারা, নির্বাণ লাভ করার পর আমি ধর্মপ্রচারে জড়িয়ে কী ভুলই না করেছি। আজ বুঝতে পারছি, যাদের জন্যে আমি সত্য প্রচারে নেমেছিলাম আসলে সমাজে এদের কোন মূল্য নেই। এদের মূল্য সমাজ দেয়নি কোন কালে। চিরকাল মধ্যপন্থার এই মানুষগুলো আইডেনটিটি ক্রাইসিসে ভোগেছে। সমাজে দুই দলই আছে। চালাক আর বোকা। চতুর লোকেরা ছলা কলায় ধর্ম বিজ্ঞান, নীতিনৈতিকতা সবই তাদের ভোগের অনুকূলে করে নেয়। ভগবানকে ঠুঁটো জগন্নাৎ বানিয়ে ভক্ত সেজে সমাজের সব লুটে নেয়। ক্ষমা কর মা মিনারা, আমায় ওরা ভগবান বানিয়ে তোদের মারার খেলায় মেতেছে।

ধর্ম বাহানা মাত্র। আসল উদ্দেশ্য লুটপাট। ধর্ম পালনে আমি মানুষকে অষ্টাঙ্গিক  মার্গ পরিপালনের নির্দেশ দিয়েছিলাম। সম্যক্ দৃষ্টি, সম্যক্ সংকল্প, সম্যক্ বাক্য, সম্যক কর্ম, সম্যক্ জীবিকা, সম্যক্ ব্যায়াম, সম্যক্ স্মৃতি, সম্যক সমাধি(চিন্তা)। কোন মার্গতেই সম্যক্ হতে পারল কতজন ? ভিক্ষুর সংখ্যা বাড়ল, সংঘের সংখ্যা বাড়ল। হীনযান, মহাযান বিভেদ প্রকট হল। আমার মূর্তির সংখ্যা বাড়ল আর আমার দেওয়া সম্যক চিন্তা হ্রাস পেতে থাকল। আমি কিছুই করতে পারলাম না। যে আমি সংসারের সুখ ত্যাগ করলাম, সমাজের সুবিধাবাদীরা আমার সুখের জন্যে বর্ষাবাসের আরামের ব্যবস্থা করল, চন্দন কাঠের পালঙ্ক বানিয়ে দিল। শুধু কি তাই! আনন্দকে আমার পরিচর্যাকারী বানিয়ে দিল। ধর্মের ধ্বজা আমাকে আনন্দ দিল। একবার মনের দুঃখে একাকি বর্ষাবাস করলাম। ফায়দা লুটা থেকে বিরত হল না সুবিধাবাদীরা। প্রচার করল ঐ বর্ষায় আমি স্বর্গে ছিলাম। ইন্দ্র প্রমুখ দেবতাদের সঙ্গে সুখ ভোগ করেছি ওখানে। আমার অনুসারীরাই আমার সম্পর্কে মিথ্যা রটাল। হিন্দুরা আমাকে বিষ্ণুর অবতার বললেও আমি তা বার বার অস্বীকার করেছি। আমি নিজে ভগবান নই। আমি দুঃখ থেকে পরিত্রাণ পেতে নিজেই সিদ্ধিলাভ করেছি। নির্বাণ লাভের পথ বলে দিয়ে মোহগ্রস্থ মানুষের উপকার করতে চেয়েছিলাম। ধীরে ধীরে সবাই আমাকে ভগবান বানিয়ে দিল। নির্বাণে আমার কী লাভ হল, মিনারা ?

বুদ্ধের বিদায়লগ্ন উপস্থিত হলে, মিনারার চোখে জল এল। বহুদিন চোখে জল আসে না। ভিক্ষুদের নির্যাতনে কাঁদতে ভুলে গিয়েছিল মিনারা। বুদ্ধ অনুরোধ করলেন, কিছু একটা বল মা। মিনারা বলল আমার নির্বাণ লাভ হয়েছে গৌতম। তবে আমি মহাপরিনির্বাণ চাই। আমি দস্যু অঙ্গুলিমালা নই। আমি আপনার শিষ্যদের বলা আরেকটি গল্প হতে চাই না। গল্পচ্ছলে আপনারা যারা ধর্মের পৃথিবী গড়েছেন তাদের খেলার পুতুল হয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই উত্তম। অন্ধকারে হারিয়ে গেলেন গৌতম। বৌদ্ধ রোহিঙ্গারা দস্যু অঙ্গুলিমালার একশ একতম মাথার সন্ধানে বেরিয়ে পড়ল।

আরও পড়ুন: জয়পুরহাটের কালাইয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে চারজন আটক

রম্যলেখক

শীর্ষ সংবাদ:

ঈদ ও নববর্ষে পদ্মা সেতুতে ২১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা টোল আদায়
নতুন বছর অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে: প্রধানমন্ত্রী
কলমাকান্দায় মোটরসাইকেলের চাকা ফেটে তিনজনের মৃত্যু
র‌্যাব-১৪’র অভিযানে ১৪৫ পিস ইয়াবাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী আটক
সবার সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করুন: প্রধানমন্ত্রী
ঈদের ছুটিতে পর্যটক বরণে প্রস্তুত প্রকৃতি কন্যা জাফলং ও নীল নদ লালাখাল
কেন্দুয়ায় তিন দিনব্যাপী ‘জালাল মেলা’ উদযাপনে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত
ফুলবাড়ীতে ঐতিহ্যবাহী চড়কসহ গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠিত
কেন্দুয়ায় আউশ ধানের বীজ বিতরণ ও মতবিনিময় অনুষ্ঠিত
কলমাকান্দায় দেশীয় অস্ত্রসহ পিতাপুত্র আটক
ঠাকুরগাঁওয়ে গ্রামগঞ্জে জ্বালানি চাহিদা পূরণ করছে গোবরের তৈরি করা লাকড়ি গৃহবধূরা
ফুলবাড়ীতে এসিল্যান্ডের সরকারি মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোন চাঁদা দাবি: থানায় জিডি দায়ের
ফুলবাড়ীতে সবজির দাম উর্ধ্বমূখী রাতারাতি দাম বাড়ায় ক্ষুব্ধ ভোক্তা
ধর্মপাশায় সরকারি রাস্তার গাছ কেটে নিলো এক শিক্ষক
সাঈদীর মৃত্যু নিয়ে ফেসবুকে ষ্ট্যাটাস দেয়ায় রামগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা বহিস্কার
বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়ীতে অনশন
মসিকে ১০ কোটি টাকার সড়ক ও ড্রেনের কাজ উদ্বোধন করলেন মেয়র
কলমাকান্দায় নদীর পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ-বেত শিল্প
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রাবন্ধিক যতীন সরকারের জন্মদিন উদযাপন
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ যতীন সরকারের ৮৮তম জন্মদিন আজ
১ বিলিয়ন ডলার নিয়ে এমএলএম mtfe বন্ধ
কলমাকান্দায় পুলিশের কাছে ধরা পড়লো তিন মাদক কারবারি
আটপাড়ায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ১০৩ জন কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা
নকলায় ফাঁসিতে ঝুলে নেশাগ্রস্থ কিশোরের আত্মহত্যা
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুল ইসলামের রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস
কলমাকান্দায় আগুনে পুড়ে ২১ দোকানঘর ছাই

Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/durjoyba/public_html/details.php on line 809