
৪ বছরেও সংস্কার হয়নি সেতু,ভোগান্তি চরমে
সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার আন্দারুপাড়া শান্তির মোড় এলাকার খলচান্দার সেতুটি প্রায় তিন, চার বছর আগে ভেঙে গেলেও সংস্কার না করায় দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন কয়েক গ্রামের প্রায় ১০/১২ হাজার মানুষ। এ কারণে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছে পোড়াগাঁও ইউনিয়নসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ। এমতাবস্থায় দ্রুত সেতুটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়,উপজেলার খলচান্দা,আন্দারুপাড়া,বুরুঙ্গা,কালাপানি ও বারমারী এলাকায় লোকজনের যাতায়াতের জন্য প্রায় ১৮ বছর আগে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের মাধ্যমে খলচান্দা এলাকায় এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়।গত ২০১৯/২০ সালে একটি বালুবোঝাই ট্রাক সেতুটির উপর দিয়ে যাওয়ার সময় দেবে যায়। দীর্ঘদিন ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় থাকার পর সংস্কারের অভাবে সম্প্রতি সেতুটি ভেঙে পড়ে।এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন এলাকাবাসীরা।
এতে বিকল্প সড়ক হিসেবে প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যানবাহন পারাপার করতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। প্রায় তিন চার বছর ধরে সেতুটি ভেঙে থাকলেও মেরামতের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। সম্প্রতি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের অর্থায়নে পায়ে হেঁটে খাল পারাপারের জন্য ভেঙে পরা সেতুর ২০ মিটার ভাটিতে একটি স্টিলের সাঁকো তৈরী করে দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,প্রায় তিন চার বছর আগে সেতুটির কিছু অংশ ভেঙে গেলেও ঝুকি নিয়ে চলাচল করতো স্থানীয়রা। তবে সেতুটি দীর্ঘদিনেও সংস্কার না করায় সম্প্রতি একেবারেই ভেঙে পড়েছে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে সেতুটি।এতে কেউ হঠাৎ অসুস্থ হলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে চিকিৎসা নিতেও ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্থানীয়দের।
কৃষকের উৎপাদিত ফসল ও প্রয়োজনীয় কোন জিনিস আনা নেওয়ায় প্রায় চার কিলোমিটার ঘুরে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে হচ্ছে।ছাত্র ছাত্রী চলাচল করতে পারছেনা স্কুল কলেজে।খলচান্দা গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জিত কোচ বলেন,আমাদের গ্রামে আসার রাস্তাটা মাটির।বর্ষা মৌসুমে আমাদের চলাচলের খুব কষ্ট হয়। এখন সেতুটা একেবারেই ভেঙে পড়ায় আমাদের কষ্ট আরোও বেড়ে গেছে। সরকারী ভাবে একটা সেতু নির্মাণ করে দিলে চার গ্রামের মানুষের কষ্ট দুর হতো।
স্থানীয় বাসিন্দা পরমেশ্বর কোচ বলেন,কেউ অসুস্থ হলেও সেতুর কারনে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারিনা৷ ছেলেমেয়েরা স্কুলেও যায় খুব কষ্টে।দ্রুত সেতুটি সংস্কার করা হলে আমাদের খুব উপকার হইতো।অটোচালক ফোরকান আলী বলেন,এতদিন তো সেতু দেবে গিয়ে হেলে থাকলেও যাতায়াত করা যেতো। কিন্তু এখন তো সেতুটি একেবারেই ভেঙে পড়েছে।সেতু পার হলেই আমার বাসা৷কিন্তু রাতের বেলায় বাড়ি ফিরতে হয় চার কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ঘুরে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পোড়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন বলেন,সংস্কার না হওয়ায় সম্প্রতি শান্তির মোড়ের খলচন্দা সেতুটি সম্পূন্ন ভাবে দেবে গেছে। চলাচলে মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে দেবে যাওয়া সেতুর পাশে পায়ে হেটে চলাচলে একটি সাঁকু নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে সেতুটা নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো.আবদুল হান্নান বলেন,সেতুটি নির্মাণে জন্য ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সেতু নির্মাণের প্রস্তবনা পাঠানো হয়েছে।আশা করা হচ্ছে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বরাদ্দ পাওয়া যাবে।বরাদ্দ পেলেই দ্রুত সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।
আরও পড়ুন: ঝিনাইগাতীতে সাংবাদিকদের সাথে নবাগত ইউএনও’র মতবিনিময় সভা