
কেন্দুয়ায় এক ইউনিয়নে দুইজন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান
কেন্দুয়া উপজেলার ৮নং বলাইশিমুল ইউনিয়ন পরিষদে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দাবিদার দুইজন। নির্বাচিত চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে চরম দ্বন্দ। তারা দুই ভাগ হয়ে যাওয়ায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে দিন দিনই জটিলতা বাড়ছে।
জানাযায়, চলতি বছরের গত ০৮ অক্টোবর নির্বাচিত ইউ.পি চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এই পদ শূণ্য হলে ৯ অক্টোবর কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমদাদুল হক তালুকদার স্বাক্ষরিত এক পত্রে চেয়ারম্যানের শূণ্যপদ পূরণের জন্য প্যানেল চেয়ারম্যান-১ আরিফ হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তিনি ওই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত সাধারণ ইউ.পি সদস্য। ২০২২ সালের ০৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি সদস্য নির্বাচিত হন। ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রæয়ারি ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম সভায় ইউ.পি চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে ৩ জন প্যানেল চেয়ারম্যান মনোনিত করা হয়। এর মধ্যে আরিফ হোসেন প্যানেল চেয়ারম্যান-১, সারোয়ার জাহান খান হুমায়ুন প্যানেল চেয়ারম্যান-২ ও সংরক্ষিত আসনে নিলুফা ইয়াছমিন সোনাই প্যানেল চেয়ারম্যান-৩ মনোনিত হন।
প্যানেল চেয়ারম্যান-১ আরিফ হোসেনের অভিযোগ তাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার ৯ অক্টোবর স্বাক্ষরিত চিঠিটি ২২ অক্টোবর তিনি পান। চিঠি পেয়েই তিনি ২৩ অক্টোবর জরুরি সভা আহবান করেন। ইউনিয়ন পরিষদে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সকল ইউ.পি সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
পরিষদের কাজ সুন্দর ভাবে পরিচালনা করার জন্য সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তার অভিযোগ ৫নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত ইউ.পি সদস্য প্যানেল চেয়ারম্যান-২ সারোয়ার জাহান খান হুমায়ুন সভার পরদিন থেকেই বিএনপি দলীয় লোকদেরকে নিয়ে তাকে পরিষদে যেতে নিষেধ করেন। পরিষদে গেলে তাকে হেনস্তা করা হবে বলেও হুমকি দেন।
গত ২৯ অক্টোবর সারোয়ার জাহান খান হুমায়ুন নেতৃত্বে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ আরিফ হোসেনকে আওয়ামীলীগের লোক আখ্যা দিয়ে সকল ইউ.পি সদস্যদের নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি স্মারক লিপি দেন। এর তদন্ত শেষ না হতেই ৩১ অক্টোবর সারোয়ার জাহান খান হুমায়ুন স্বাক্ষরিত এক পত্রে ১০ নভেম্বর একটি সভা আহবান করেন। দায়িত্ব না পেয়েও তিনি ইউনিয়ন পরিষদে বসে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন।
এব্যাপারে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ সারোয়ার জাহান খান হুমায়ুন সাথে যোগাযোগ করা হলে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ আরিফ হোসেনকে হুমকির ঘটনা অস্বীকার বলেন, আমি তাকে কোন প্রকার হুমকি বা ধমকি দেইনি। তিনি নিজেই পরিষদে আসেন না। কারণ সকল ইউ.পি সদস্যগণ তার ব্যবহারে অসন্তুষ্ট। যেজন্য তার বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদের অচলাবস্থা দুরকরতে আমি প্যানেল চেয়ারম্যান-২ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।
এদিকে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ আরিফ হোসেন তাকে পরিষদে যেতে বাধা এবং হুমকি ধমকির ঘটনাটি গত ০৩ নভেম্বর নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। একই অভিযোগ তিনি নেত্রকোণা পুলিশ সুপার, কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অফিসার ইনচার্জ কেন্দুয়া থানাকে অবহিত করেছেন। জানতে চাইলে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন প্যানেল চেয়ারম্যন-১ যদি অনুপস্থিত থাকেন আইনত প্যানেল চেয়ারম্যান-২ দায়িত্ব পালন করবেন।
আরও পড়ুন: কেন্দুয়া উপজেলা আ.লীগ নেতা কামরুল হাসান র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার