
কলমাকান্দায় বিএনপির ২৮৫ নেতাকর্মীর নামে পুলিশের মামলা
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় শুক্রবার দুপুরে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় বিএনপির ৩৫ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছে পুলিশ। এতে অজ্ঞাত ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। শনিবার এ মামলা দায়ের করা হয়।
পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার বিকেলে বিএনপির নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসহ সরকার বিরোধী স্লোগান দেয়। এসময় তারা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। হামলায় পুলিশের ৪ সদস্য আহত হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। এ ঘটনায় শনিবার বিশেষ ক্ষমতা আইনে কলমাকান্দা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জুনেব খাঁন বাদী হয়ে লেংগুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান ভূইয়া, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মতিনসহ বিএনপির ৩৫ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরো ২৫০ জনকে আসামি করে মামলা করছে।
এবিষয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এমএ খায়ের বলেন, বিএনপি’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গা থেকে নেতাকর্মীরা বিএনপি কার্যালয়ে আসতে থাকে। এ সময় পুলিশ বাধা দেয় ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এসময় পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর গুলি ছুড়েছে । এতে বিএনপির অনেকে নেতাকর্মীরা আহত হয়েছে। বিএনপির কেউ পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছোড়েনি। তিনি আরও বলেন, এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি করতেই পুলিশ মিথ্যা মামলা করেছে।
কলমাকান্দা থানার ওসি আবুল কালাম (পিপিএম) বলেন, পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে এই মামলাটি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ মামলায় কেউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্ঠা চলছে।
উল্লেখ যে, বিএনপি’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন উপলক্ষে থানায় অনুমতির জন্য আবেদন করেছিল দলটির নেতারা। কিন্তু থানা থেকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। উপজেলা দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকাও উত্তোলন করার সুযোগ পাননি দলটি নেতারা । এরপরও শুক্রবার বিএনপির ৪৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মিছিল বের করে নেতাকর্মীরা একাধিক পয়েন্ট দিয়ে কলমাকান্দা সদরের বিএনপি কার্যালয়ে আসতে শুরু করে।
এতে বাধা দেয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সংষর্ষে আহত হয় ইউপি সদস্য ও কলমাকান্দা সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক, যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, মাসুম মিয়া, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক অমিত সরকার, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা বাবুল মিয়া, দেলোয়ার হোসেন, যুবশ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক মিয়া, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক গোলাম রসুল, সদস্য সচিব শেখ রবিন, সদস্য মাজহারুল ইসলাম হৃদয়, সোহানুর রহমান সোহান , শ্রমিকদল নেতা রুবেল মিয়া, যুবদল নেতা ভুট্টু মিয়া, স্বপন মিয়া, তাইমুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা খোকন মিয়া, আবুল কাসেমসহ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অন্তত অর্ধশত নেতাকর্মী।
এসময় পুলিশের এএসআই মামুন ইবনে হেলাল, এএসআই শরিফ উদ্দিন, এএসআই আসাদুজ্জামান, পুলিশ সদস্য সাজাদ হোসেনসহ চারজন আহত হন।