
কেন্দুয়ায় ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১০
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার ৯ নম্বর নওপাড়া ইউনিয়নের দনাচাপুর গ্রামে ইভটিজিংয়ের ঘটনার জেরে সংঘর্ষে একজন নিহত এবং অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১০ জুন) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের সূত্রে জানা যায়, বিকেল আনুমানিক ৫টা ২০ মিনিটে দনাচাপুর গ্রামের সাইদুল ইসলামের বাড়ির সামনে তার পরিবারের কয়েকজন নারী সদস্য অবস্থান করছিলেন। এ সময় একই এলাকার আমিন (২৪), পিতা-সাদেক মিয়া এবং সজিব (৩০), পিতা-বাচ্চু মিয়া সহ কয়েকজন যুবক ওই নারীদের উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য করতে থাকে এবং গান গেয়ে উত্ত্যক্ত করে।
নারীরা প্রতিবাদ করলে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অভিযুক্তদের সরিয়ে দেয়। তবে এর মাত্র ১০ মিনিট পর, আনুমানিক ৫টা ৩০ মিনিটে মৃত আরমুজ আলীর ছেলে মোঃ সিদ্দিক মিয়া (৪০) এর নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল দেশীয় অস্ত্রসহ সাইদুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে এবং নারী-পুরুষ নির্বিশেষে পরিবারের সদস্যদের বেধড়ক মারধর করে।
এতে আহত হন অন্তত ১০ জন। গুরুতর আহতদের মধ্যে রয়েছেন:
১। সাইদুল ইসলাম (৪৫)
২। হাবিবুর রহমান (৩২)
৩। আনিছুর রহমান (৪৫), পিতা-মৃত চান মিয়া ফকির
৪। সম্রাজ (৫৫)
৫। খোদেজা (৩২)
রাত আনুমানিক ৮টা ১০ মিনিটে গুরুতর আহত আনিছুর রহমান চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন:
১। মোঃ সিদ্দিক মিয়া (৪০)
২। আমিন (১৭)
৩। মনির (২৬)
৪। সজিব (২৭)
৫। কালাম (৪০)
৬। সালাম (৩৬)
এছাড়াও আরও অজ্ঞাতনামা কয়েকজন এ হামলায় অংশ নিয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
ঘটনার পর থেকে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, “ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে। নিহত ব্যক্তির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
তিনি আরও বলেন, “একটি সামাজিক অপরাধ থেকে শুরু হয়ে এমন প্রাণঘাতী সহিংসতায় রূপ নেওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।”
এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো মামলা রুজু হয়নি বলে থানা সূত্রে জানা গেছে। এলাকাবাসীর দাবি, এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
দুর্জয় বাংলা