
১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় বাবরসহ সাতজন খালাস
চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সাত আসামি মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পেয়েছেন। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় দেন।
রায়ে উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়ার মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া ছয়জনের ১০ বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বাবরের আইনজীবী মোহাম্মাদ শিশির মনির জানান, মামলায় বাবরের বিরুদ্ধে কোনো প্রত্যক্ষ প্রমাণ বা সাক্ষী ছিল না। তদন্ত প্রক্রিয়ায় আইনানুযায়ী যথাযথ নিয়ম মানা হয়নি।
হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয় গত ৬ নভেম্বর। রাষ্ট্রপক্ষ প্রথমে পেপারবুক (মামলার নথিপত্র) উপস্থাপন করে, যা শেষে ৮ ও ৯ ডিসেম্বর যুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমে শেষ হয়। এরপর ৯ ডিসেম্বর আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়। বাবরের পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির ১১ ডিসেম্বর যুক্তি উপস্থাপন করেন।
তিনি যুক্তি দেন, ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল সিইউএফএল ঘাট থেকে আটক ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় বাবর মূলত আসামি ছিলেন না। ২৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পর পুনরায় তদন্তের নির্দেশনা দিয়ে তাঁকে আসামি করা হয়। এই তদন্ত আইনানুযায়ী হয়নি এবং এর ভিত্তিতে দেওয়া শাস্তি বেআইনি।
২০০৪ সালের ঘটনাটি নিয়ে কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা হয়। ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় ঘোষণা করে। অস্ত্র মামলায় ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও চোরাচালান মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
মামলার রায় ঘোষণার পর ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি নথিপত্র হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়। একইসঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন। হাইকোর্টের আজকের রায়ে বাবরসহ সাতজন খালাস পেলেন, যা মামলাটিতে নতুন মোড় আনল।