![চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামল চন্দ্রযান-৩, ইতিহাস গড়ল ভারত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামল চন্দ্রযান-৩, ইতিহাস গড়ল ভারত](https://www.durjoybangla.com/media/imgAll/2023May/Chandrayaan-3-landed-on-the-south-pole-of-the-moon-India-made-history-2308251558.jpg)
চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামল চন্দ্রযান-৩, ইতিহাস গড়ল ভারত
চাঁদের বুকে নেমেছে চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম। প্রথমবারের মতো চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলতার সঙ্গে ও নিরাপদে মহাকাশযান অবতরণের ইতিহাস গড়ল ভারত।
আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চন্দ্রযান-৩-এর নিরাপদ অবতরণ হয় বলে বিবিসি জানিয়েছে। এর আগের সব অভিযান ছিল বিষুব রেখার কাছে চন্দ্রপৃষ্টে। পানির খোঁজে দক্ষিণ মেরুতে অভিযান এই প্রথম।
বিক্রমের ভেতরে রয়েছে একটি রোভার। চাঁদে অবতরণের পর ছয় চাকার রোভারটি বের হয়ে আসবে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এখন ছবির জন্য চাঁদে রোভার পাঠানো সম্ভব হবে এবং নিরাপদে রোভারকে ফেরানো যাবে।
নিরাপদ অবতরণের জন্য চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে উপযুক্ত জায়গা খুঁজছিল বেশ কিছু সময় ধরে। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) আগেই জানায়, ২৩ আগস্ট বিক্রমের চাঁদে অবতরণের সম্ভাবনা আছে।
এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার চাঁদের একপাশের বেশ কিছু ছবি তুলে পাঠিয়েছে ল্যান্ডার বিক্রম। রাশিয়ার মহাকাশযান লুনা-২৫ চাঁদে বিধ্বস্ত হওয়ার এক দিন পর ছবিগুলো প্রকাশ করেছে ইসরো। এর আগে রাশিয়ার প্রথম মহাকাশযান ‘দ্য ক্র্যাফট’ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতেই নামতে চেয়েছিল। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিধ্বস্ত হয়েছে।
ইসরো জানায়, গত সোমবার সকাল থেকে ল্যান্ডার বিক্রম অবতরণের জায়গা খুঁজছিল। এটির ‘হ্যাজার্ড ডিটেকশন ও অ্যাভোয়ডেন্স’ ক্যামেরার মাধ্যমে ছবি তুলছে। এই সাদা-কালো ছবিগুলো গর্ত ও পাথরকে চিহ্নিত করে অবতরণে সাহায্য করবে। চাঁদের এই অংশকে ‘চাঁদের অন্ধকার দিক’ বলা হয়। কারণ, এই দিক সম্পর্কে অল্প তথ্য জানা গেছে। বিজ্ঞানীদের মতে, এই জায়গায় অবতরণ করা কঠিন।
ল্যান্ডারটি চাঁদের কাছের কক্ষপথে (২৫ থেকে ১৩৪ কিলোমিটারের মধ্যে) অবস্থান করছিল; চাঁদে সূর্যোদয়ের অপেক্ষা করছে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণে সফল ভারতই প্রথম দেশ। যুক্তরাষ্ট্র, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের মহাকাশযান চাঁদে অবতরণ করলেও এই অংশে নামতে পারেনি।
ভারতে ২০০৮ সালে প্রথম চন্দ্র অভিযানের ১৫ বছর পর এই অভিযান শুরু হয়। আগের অভিযানে চাঁদের পৃষ্ঠে পানির অণুর উপস্থিতি পায়। দিনের বেলায় চাঁদে বায়ুমণ্ডলের উপস্থিতি রয়েছে, তা-ও এই অভিযানের মাধ্যমে জানা যায়। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে মহাকাশ অভিযানে যায় ‘চন্দ্রযান-২’। সেখানেও অরবিটার, ল্যান্ডার ও রোভার ছিল। অভিযানটি আংশিক সফল হয়। মহাকাশযানের অরবিটারটি এখনো চাঁদের কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করছে। তবে এটির ল্যান্ড-রোভার চাঁদে অবতরণের আগেই ধ্বংস হয়।
ইসরোর প্রধান শ্রীধারা পানিকার সোমনাথ বলেন, তাঁরা ওই ধ্বংসস্তূপ থেকে ডেটা নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন। চন্দ্রযান-৩-এর ত্রুটি ঠিক করতে এই ডেটাগুলো ব্যবহার করছেন। চন্দ্রযান-৩-এর ওজন ৩ হাজার ৯০০ কেজি। এটি তৈরিতে ৬১০ কোটি রুপি খরচ হয়েছে। বিক্রম ল্যান্ডারটি প্রায় দেড় হাজার কেজি। আর ‘প্রাজ্ঞ’ রোভারটির ওজন ২৬ কেজি।
চাঁদের দক্ষিণ মেরুর বিশাল অংশ এখনো অনাবিষ্কৃত। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এই ছায়াযুক্ত অঞ্চলে পানি থাকতে পারে। চন্দ্রযান-৩-এর প্রধান লক্ষ্য বরফের সন্ধান করা। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, যা ভবিষ্যতে চাঁদে বসবাস করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। চাঁদ ভবিষ্যতে মঙ্গল বা অন্যান্য গ্রহের যাওয়ার জন্য মহাকাশযানের ঘাঁটি হবে।
আরও পড়ুন: এমপি ওয়ারেসাতকে ‘অপহরণের পর বিয়ে’ কলেজছাত্রীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা