মুক্তিযোদ্ধা নুর মোহাম্মদ। ছবি: দুর্জয় বাংলা
দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার ১০ হরিরামপুর ইউনিয়নের খনিজ শিল্পাঞ্চল মধ্যপাড়া গ্রামের নুর মোহাম্মদ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সরাসরি অংশ গ্রহন করে আজো যুদ্ধ কালীন অবদানের স্বীকৃতি মুক্তিযোদ্ধা সনদ লাভ করতে পারেন নাই। তাঁর সহযোদ্ধাদের অনেকেই বীর মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে সমস্ত সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন।
অথচ একই সঙ্গে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা সত্ত্বেও আমলাতান্ত্রিক নানান জটিলতায় ও নিজের শারিরীক মানষিক স্বাস্থ্য জনিত অসুস্থতার কারণে সঠিকভাবে দৌড় ঝাপ করতে না পারায় স্বাধীনতার ৫২ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরেও নিজেকে মুক্তি যোদ্ধা হিসেবে কাগজে কলমে প্রতিষ্টিত করতে না পেরে হতাশায় অব্যক্ত মর্মবেদনা নিয়ে বয়সের শেষ প্রান্তে এসে মৃত্যুর অপেক্ষার প্রহর গুনছেন।
নিজ বাসায় গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপ চারিতায় আবেগতাড়িতভাবে কান্না জনিত কন্ঠে আক্ষেপ করে বলেন-আমার রাষ্ট্রীয় সহায়তার কোন প্রয়োজন নেই মুক্তি যুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার ক্ষমতায় আছে এতেই আমার আত্মতৃপ্তি। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে হলেও মুক্তি যুদ্ধ কালীন অবদান রাখার স্বীকৃতি সনদ বীর মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় আমার নাম দেখতে চাই আমার সন্তানরা আমার মৃত্যুর পর যেন গর্ব করে বলতে পারে আমার বাবা মুক্তি যোদ্ধা ছিলেন এবং রাষ্ট্রিয় মর্যাদায় তাঁকে দাফন করা হয়েছে। তিনি বলেন মুক্তি যোদ্ধা স্বীকৃতি সনদ প্রাপ্তীর জন্য আমি অনেক আর্তনাদ করেছি কিন্তু আমার আর্তচিৎকার মুক্তি যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় পর্যন্ত পৌঁছে না। আমি আজীবন বঙ্গবন্ধুর আর্দশে উজ্জীবিত একজন আওয়ামী লীগের মুজিব সৈনিক।
জানা গেছে - উপজেলার খনিজ শিল্পাঞ্চলের মধ্যপাড়ার মৃত্যু জহির উদ্দিনের পুত্র মোঃ নুর মোহাম্মদ ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের বজ্র্কন্ঠের ঘোষণায় ভারতের (পশ্চিম বঙ্গ) কাটলা ইয়ুথ ক্যাম্পে (০৭ নম্বর সেক্টরে) এ ভর্তি হয়ে ০১ মাস ১৫ দিন স্বশস্ত্র প্রশিক্ষন গ্রহন শেষে দেশে ফিরে খোলাহাটি যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি জানান ১৯৭২ সালে তার বাড়িতে আগুন লাগলে বাড়ি ঘর সহ জরুরী কাগজ পত্র সমুহ পুড়ে যায় তবে তার সঙ্গে অবস্থান কারি সহ যোদ্ধারা মুক্তি যোদ্ধা তালিকায় তালিকা ভুক্ত হয়েছেন। তাঁর প্রকৃত সহযোদ্ধা হিসেবে ছিলেন মোঃ সাহাবউদ্দিন লাল মুক্তি বার্তা নং-০৩০৮০৮০১৯৯ এফ এফ নং৫৫৯ মোঃ এন্তাজুল ইসলাম লালমুক্তি বার্তা নং-০৩০৮০৮০১৪০ এফ এফ নং ৫০৪৮ মোঃ আবদুল কুদ্দুস লালবার্তা নং ০৩০৮০৮০১৮৪ এফ এফ নং ৫৫৮ স্বাধীনতা যুদ্ধ কালীন সময় তার কমান্ডার ছিলেন মোঃ কামরুজ্জামান।
নুর মোহাম্মদ রাইফেল এস্টেনগান ও গ্রেনেট চালানোতে পারদর্শী এবং তার পরিচিত নং১২৩৩ তিনি মুক্তি যোদ্ধা গেজেট ভূক্তির জন্য মুক্তি যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে আবেদন করেছিলেন যার আবেদন রশিদ নং ০৯০৩১৯৫৭৪৪৮৬৯৪ তারিখ ০৭/০৩/২০১৭ তাঁর জাতীয় পরিচয় পত্র নং২৭১৭৭৪৩৬৪৪০৮২ ফস বই নম্বর : এফ এফ নং ১২৩৩ তিনি ১৯৫৭ সালের ৯ মে জন্ম গ্রহন করেন। মধ্যপাড়া গ্রানাইট খনিগেটের বটতলী নামক স্হানে ছেলে মাহমুদ কলি কে নিয়ে একটি ছোট্ট খাবার হোটেল দিয়ে অতিকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
স্ত্রী পুত্র কন্যাকে নিয়ে তার ছোট্ট সংসারে আর্থিক সংকট থাকলেও অভাব অনটন নিয়ে নেই তাঁর কোন অভিযোগ শুধু তাঁর একমাত্র চাওয়া দীর্ঘদিন হতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত আছে তাই এখনই সময় নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার স্বীকৃতি স্বরূপ মুক্তি যোদ্ধা সনদ পেলেই তিনি নিজেকে ধন্য মনে করবেন এবং মরেও শান্তি পাবেন। তাই মুক্তি যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভদৃষ্টি কামনা করছেন তিনি।
আরও পড়ুন: অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় ট্রাক ও ট্রাক্টর জব্দ
খন্দকার সুদীপ্ত হাবিব