
শেরপুর সীমান্তে বেড়েছে চোরাচালান
শেরপুরের সীমান্তবর্তী শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী সীমান্তে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারো সক্রিয় হয়ে ওঠেছে চোরাচালানকারীরা। ভারত থেকে উপজেলার গারো পাহাড়ের খারামোরা,তাওয়াকোচা ও হারিয়াকোনা এলাকার সীমান্ত দিয়ে বাড়ছে গরু,কসমেটিক ও মাদকদ্রব্য পাচার। এতে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সরেজমিনে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে ওঠে আসে এমন তথ্য। জানা যায়,শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তঘেষাঁ গ্রামগুলোর পাশে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পোড়াকাশিয়া সীমানা।এখানে সীমানা পিলারের জিরো পয়েন্টে ভারতের কাটাতারের বেড়ার নিচে বিভিন্ন স্থানে রয়েছে গোলাকৃতির কালভার্টের ফাঁক। যেখানে কাঁটাতারের বেড়া শেষ সেখানে খোলা অংশ। কোথাও নদী বা নদীর ওপর ব্রিজ। এসব কালভার্ট,খাল আর ব্রিজের ফাঁকা স্থান ব্যবহার করে চোরাকারবারিরা।
বিএসএফ ও বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে পোড়াকাশিয়া থেকে আনছে গরু ও মাদক দ্রব্য। চোরাই পথে আসা এসব গরু বেচাকেনা হচ্ছে স্থানীয় সীমান্ত এলাকা খারামোরা, তাওয়াকোচা ও হারিয়াকোনা গ্রামে।ওইসব গ্রামের বাসিন্দারা জানান, প্রায় ৩-৪ মাস যাবত ভারতের বিএসএফের চোখ ফাঁকি দিয়ে চোরাই পথে আসছে গরু,মাদকদ্রব্য ও ভারতীয় কসমেটিক।
সপ্তাহের শনিবার ও মঙ্গলবার দিবাগত ভোররাতেই বেশি ভাগ আসে গরু। এজন্য ওইসব গ্রামে প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার সন্ধ্যা হতে জড়ো হতে থাকে পাইকাররা। বেচাকেনা হয় সীমান্ত ঘেঁষা ওইসব গ্রামে। এর পর পাহাড়ি পথ বেয়ে নিয়ে আসা হয় কর্ণঝোড়া,বালিজুরি,ভায়াডাংঙা বিভিন্ন বাজারে।গরুর সঙ্গে আসছে মাদকদ্রব্য ও কসমেটিক।এসব বিক্রি হয় সিক্রেটের মাধ্যমে। তবে মাদক ব্যবসায়ীদেরও আনাগোনা প্রকাশ্যেই।
এদিকে,খারামোরা গ্রামের তৈয়ব আলী,কালো গাজী, বালিজুরি গ্রামের বিষু আলী, আব্দুল হক,বাচ্চা গেল্লা,আব্দুর রহিম,অফিস পাড়ার নুর নবী, কর্ণঝোড়ার কমল আর বিপ্লব হলো এখানকার চোরাচালানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। ইতিপূর্বে বিপ্লব ভারতের কাটাতারের বেড়া কাটতে গিয়ে বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে দীর্ঘদিন জেল হাজতে ছিল। দেশেও একাধিকবার পুলিশ ও ডিবির জালে ধরা পড়ে। এর আগে অনেক মাদকদ্রব্য ও কসমেটিক ধরা পড়েছে পুলিশ ও রেবের হাতে কিন্তু বিজিবির কাছে ধরা না পরার কারণ কি এলাবাসীর প্রশ্ন ?শুধু বিপ্লবই না এদের মধ্যে অনেকেই মাদক ও গরুসহ একাধিকবার পুলিশ এর হাতে আটক হয়েছিল।জেলও খেটেছে। এ ব্যাপারে অন্যদের সঙ্গে ফোনে বা সরাসরি যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
আরেক সূত্রে জানা যায়, সীমান্তের চোরাচালানের নিয়ন্ত্রণ করছে খারামোরা বর্ডার নিয়ন্ত্রণে ডিবির নাম করে তাওয়াকোচার বিজিবির লাইনম্যান বালিজুরি অফিস পাড়ার ফরিদ ওরফে টেন্ডুল ফরিদ,পুলিশের লাইনম্যান হাতিবর গ্রামের বাদশা ও বালিজুরি বাজারের ওয়াহেদ আলী।কর্ণজোড়ার হারুন মহাজনের ছেলে ফরহাদ, বড় গরু ব্যবসায়ী বিলভরটের চিনি মেম্বারের ছেলে আশরাফুল,আফছার আলী ও হারিয়াকোনা বর্ডারের হায়দর আলী।একদিকে প্রশাসন কে টাকা দিতে হবে বলে এই লোকগুলো হাতিয়ে নিচ্ছে অবৈধভাবে টাকা।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সীমান্তে প্রবেশ করলেই মোবাইল ফোনে সতর্ক করে দেয় অবৈধ চোরাকারবারিদের কে ফলে নির্ভয়েই ব্যবসা করছেন চোরাচালানকারীরা।বিনিময়ে এ দু'চার জন মিলে তাদের কাছ থেকে গরু প্রতি নেয় দুই'শত থেকে তিন'শত টাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গরু চোরাচালানকারী জানান,হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে টাকা পাঠানো হয়। সেখান থেকে নিয়ে আসা হয় গরু, মাদকদ্রব্য ও প্রসাধনী সামগ্রী কসমেটিক।
এ বিষয়ে আজ ২০ ডিসেম্বর বুধবার নকশী বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার জুলফিকার আলির সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি এবং তিনি অসুস্থ বলে দেখাও করেনি বিজিবি’র এক সদস্য জানান।এলাবাসী জানান বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার জুলফিকার আলী এসব বিষয়ে অনেক কিছুই জানেন।