ভেকু দিয়ে মাটি কাটার দৃশ্য: ছবি: সংগৃহীত
নেত্রকোণার মদনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খনন করা প্রায় অর্ধ কোটি টাকার মাটি বিক্রি করে দিচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। অভিযোগের পরও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। স্থানীয়দের দাবি উপজেলা প্রশাসনের যুগশাজসেই লক্ষ লক্ষ টাকার মাটি নিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালী সিরাজ সহ কয়েকজন। রহস্যজনক কারণে ব্যবস্থা নিচ্ছে না উপজেলা প্রশাসন। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে হলহলিয়া খালের মাটি নেয়ার ব্যাপারে অভিযোগ পেয়ে উপজেলা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।
জানা গেছে, মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের পাহারপুরের মধ্য দিয়ে মগড়া নদী থেকে হাওরে পানি প্রবাহের জন্য হলহলিয়া খাল ২০২১ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড খনন করেন। প্রথম দফা ২০২১ সালে খননের একাংশের মাটি ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকায় নিলামে বিক্রি করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সেই মাটি এক সপ্তাহের মধ্যেই সরিয়ে নেন ইজারাদার। কিন্তু ২০২৩ সালের ডিসেম্বর ২১ তারিখ থেকে জানুয়ারি ১৬ তারিখ পর্যন্ত প্রায় ২৭ দিন ধরে (চলমান) মাটি তুলে বিক্রি করছেন একটি প্রভাবশালী মহল। এদের সাথে যুক্ত রয়েছেন তথাকথিত একজন সাংবাদিক। প্রতিদিন হললিয়া খালের পাড় থেকে আটটি গাড়ি দিয়ে মাঠি নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি গাড়ি দিনে ১৫-২০ টি টিপ মাটি নিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেক গাড়ি মাটি ৮শত টাকায় বিক্রি করেন। ওই হিসেবে প্রতিদিন ১২০-১৬০ গাড়ি মাটি নিয়ে যাচ্ছেন অসাধুচক্র। যার মূল্য ৯৬ হাজার থেকে ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা। ওই ২৭ দিনে ২৫ লক্ষ ৯২ হাজার থেকে ৩৪ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকার মাটি বিক্রি করেছে অসাধুচক্র। উপজেলা প্রশাসনকে এলাকার জনসাধারণ ও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার ডিজিএফআইয়ের মদনের দায়িত্ব পালনকারী ব্যাক্তি ও স্থানীয় সাংবাদিকরা জানালেও মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহ আলম মিয়া অদৃশ্য কারণে ব্যবস্থা নেননি। তবে স্থানীয়দের দাবি উপজেলা প্রশাসন ও প্রভাবশালী মহলের যুগশাজসে খালের মাটি বিক্রি হচ্ছে। প্রভাবশালীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করেন তারা।
হলহলিয়া খালের মাটি বিক্রয়কারীদের একজন সিরাজু ইসলাম বলেন, আমরা ইউএনও স্যারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে মাটি বিক্রি করছি। তিনি বলেছেন লিখিত লাগবেনা আমি বলেছি এখানে কেউ যাবেনা।
নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ড এর কার্য সহকারী এনামুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের নির্দেশে হলহলিয়া খালে গিয়ে মাটি কাটার বিষয়টি দেখি। পরে স্যারকে এ বিষয়ে জানাই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম মিয়া বলেন হলহলিয়া কালের মাটি কাটার বিষয়টি আমার আগের স্যার নিলামে বিক্রি করে ছিল। আপনাদের একজন সাংবাদিক এখানে জড়িত এ বিষয়টি আপনারা সবাই জানেন। আপনার আগের স্যারের নিলামের সময়সীমা পার হয়ে গেছে তাহলে এখন কিভাবে মাটি বিক্রি করছে? এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে যান।
নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান বলেন, মদন উপজেলার হলহলিয়া খালে মাটি বিক্রি বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। আমরা তো ব্যবস্থা নেওয়ার কেউ না। প্রশাসন যদি ব্যবস্থা না নে তাহলে আমরা কি করতে পারি?
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহেদ পারভেজ জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: গভীর রাতে শীতার্তদের কাছে কম্বল নিয়ে ইউএনও পলাশ কুমার বসু
