![বন্ধ হলো বড়পুকুরিয়ায় কয়লা উত্তোলন বন্ধ হলো বড়পুকুরিয়ায় কয়লা উত্তোলন](https://www.durjoybangla.com/media/imgAll/2023May/Coal-mining-in-Barapukuria-has-been-stopped-2308301601.jpg)
বন্ধ হলো বড়পুকুরিয়ায় কয়লা উত্তোলন
নির্গমমুখে কয়লার মজুদ শেষ হওয়ায় নতুন ফেসে যন্ত্রপাতি স্থানান্তরের জন্য বুধবার (৩০ আগস্ট) সকাল থেকে বন্ধ হয়ে গেলো দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ভূগর্ভের ১১১৩ কোল ফেস। তবে কয়লা সংকটে পড়বে না বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বিসিএমসিএল-এর ইয়ার্ডে কয়লা মজুদ আছে এক লাখ ১০ হাজার মেট্রিকটন। যা দিয়ে আগামী দুইমাস সচল রাখা সম্ভব তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির চলতি দায়িত্বে থাকা মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) খান মো. জাফর সাদিক। খনি কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির বর্তমানে বন্ধ হয়ে যাওয়া ১১১৩ ফেস থেকে চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছিল। সেখান থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন করা হয় এবং উৎপাদিত কয়লা বড়পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা হয়। এই ফেসে মজুত শেষ হয়ে যাওয়ার ফলে নতুন ফেসে যন্ত্রপাতি স্থানান্তরের জন্য বুধবার (৩০ আগস্ট) থেকে খনি থেকে কয়লা উৎপাদন বন্ধ হয়েছে।
বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির চলতি দায়িত্বে থাকা মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) খান মো. জাফর সাদিক বলেন, ১১১৩ ফেসের কয়লা মজুদ শেষ। তাই ১৪১২ নতুন ফেসে যন্ত্রপাতি স্থানান্তরের জন্য বুধবার সকাল থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ১৪১২ ফেসে ওপেন আব কাট নির্মাণ, ১১১৩ ফেস থেকে সকল ইকুইপমেন্ট স্যালভেজ ও যথাযথ মেইনটেন্যান্স করে ১৪১২ ফেসে স্থাপন করা হবে। যা প্রায় দু মাস সময়ের প্রয়োজন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে অক্টোবরের শেষে নতুন ফেস চালুর সম্ভাবনা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ১৪১২ ফেস থেকে আনুমানিক দুই লাখ ১০ হাজার মেট্রিকটন কয়লা উত্তোলন করা যাবে।
বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, খনিতে কয়লার উত্তোলন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনটি ইউনিটের মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ইউনিট দুটি বন্ধ রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র ৩ নম্বর ইউনিট চালু রেখে ১৮০-২২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। ৩ নম্বর ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ২৭৫ মেগাওয়াট। এটি উৎপাদন রাখতে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার মেট্রিক টন কয়লা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত পিডিপির কোল ইয়ার্ডে ১ লাখ ১০ হাজার মেট্রিকটন কয়লা মজুত আছে। যা দিয়ে আগামী অক্টোবর মাস পর্যন্ত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩য় ইউনিট উৎপাদন চালু রাখতে হবে। তবে, নভেম্বর মাসে কয়লা উত্তোলন সম্ভব না হলে জ্বালানির অভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেলে পুরো উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দিবে।
প্রধান প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক আরো বলেন, রংপুর বিভাগে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে এক হাজার মেগাওয়াট। বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট থেকে মাত্র ১৮০ থেকে ২২০ মেগাওয়াট উৎপন্ন করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে তিনটি ইউনিট চালু রাখতে গেলে প্রতিদিন ৪ হাজার ৮০০ মেট্রিকটন থেকে পাঁচ হাজার মেট্রিকটন কয়লার প্রয়োজন।
বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. সাইফুল ইসলাম সরকার বলেন, শিঘ্রই খনি থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যাবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তিনি খনির মাইন অপারেশন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) খান মো. জাফর সাদিকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
আরও পড়ুন: দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী যুবককে উপকরণ দিল আমরা করব জয়