শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১

দুর্জয় বাংলা || Durjoy Bangla

বাউল সাধক উকিল মুন্সী

সাজ্জাদুল হাসান

প্রকাশিত: ১৬:২৮, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আপডেট: ১৬:৩৪, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বাউল সাধক উকিল মুন্সী

বাউল সাধক উকিল মুন্সী

বাউলশিল্পী বা বাউল সাধক একটি বিশেষ ধরনের গোষ্ঠী ও লোকাচার সংগীত পরিবেশক- যারা গানের সঙ্গে সুফিবাদ, দেহতত্ত্ব প্রভৃতি মতাদর্শ প্রচার করে থাকেন। বাংলাদেশে ভাবসংগীত ও মরমি কিংবা সুফিচিন্তার ফলে বাউল দর্শনের উদ্ভব হয়েছে। বিভিন্ন শিল্পীর কণ্ঠে উকিল মুন্সীর গান গণমাধ্যম, টেলিভিশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রচার হলেও কে এই উকিল মুন্সী, প্রকৃত নামই বাকি, কীভাবে তিনি আজকের উকিল মুন্সী হলেন- তা আমাদের ভাটি অঞ্চলে অনেকের জানা থাকলেও আবার অনেকের কাছে অজানা। তার অনন্যসাধারণ সৃষ্টিকে ব্যবহার করে কেউ কেউ জনপ্রিয় হয়েছেন। কিন্তু উকিল মুন্সী রয়ে গেছেন দৃষ্টির আড়ালে। তার প্রাপ্য সম্মান ও স্বীকৃতি আরও বেশি হয়তো প্রাপ্য। তাই বাউলসাধক, গীতিকার, সুরকার উকিল মুন্সী সম্পর্কে ক্ষুদ্র পরিসরে মানুষের কাছে তথ্যগুলো পৌঁছে দেওয়াই আজকের এ লেখার উদ্দেশ্য।

গানের জগতে উকিল মুন্সী ছিলেন এক বিরহী ডাহুক। তিনি নারী-পুরুষের অন্তরের আকুতি, প্রেম-ভালোবাসা, সুখ-দুঃখ, বিরহগাথা নিয়ে গান রচনা করতেন এবং সৃষ্টিকর্তাকে উদ্দেশ করে বিরহের অনুভূতি প্রকাশ করতেন। তার জীবদ্দশায় সাধারণ মানুষ তাকে মরমি কবি উকিল মুন্সী, বাউল ফকির উকিল মুন্সী, দরদি বাউল উকিল মুন্সী, বাউল কবি উকিল মুন্সী প্রভৃতি নামে ডাকতেন। প্রকৃত অর্থে তিনি ছিলেন একজন বিরহী বাউল। তার গান ও সুরে বিরহের ব্যাকুলতা প্রাধান্য পেয়েছে। হাওরাঞ্চলের বিচ্ছেদ গানের ধারায় তিনিই ছিলেন শ্রেষ্ঠ ও আদরনীয়।

উকিল মুন্সী নেত্রকোনার জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার নূরপুর বোয়ালী গ্রামে ১৮৮৫ সালের ১১ জুন এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বিচিত্র ও নির্মোহ জীবনযাপন করেছেন তিনি। একদিকে মসজিদের ইমামতি, অন্যদিকে সুরের সাধনায় তিনি এই অঞ্চলের মানুষের জীবনকেই হাজির করেছেন গানে। বেশ সচ্ছল ও সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মেছেন তিনি। তার এক ছোট ভাই ছিলেন আব্দুল মজিদ। পিতা-মাতা চেয়েছিলেন ছেলে লেখাপড়া শিখুক। কিন্তু বিধিবাম। শৈশবেই বাবাকে হারান। গৃহশিক্ষকের কাছে তিনি শৈশবেই বাংলার পাশাপাশি আরবি, ফারসি ও পবিত্র কোরআনের তালিম নেন। তার প্রকৃত নাম আব্দুল হক আকন্দ। তার পিতা গোলাম রসুল আকন্দ ও মাতা উকিলেন্নেসা। পিতাকে হারানোর পর পড়াশোনা আর বেশিদিন করা হয়নি উকিল মুন্সীর। তার জীবনদ্দশায় মোহনগঞ্জের জৈনপুর, গাগলাজুর, শ্যামপুর, আটবাড়ীসহ বিভিন্ন জায়গায় দিনযাপন করেন। তার বয়স যখন ৩০ বছর, তখন তিনি ইবাদতের জন্য মসজিদে চলে যান এবং সেখানে ইমামতি করেন ও ছেলেমেয়েদের আরবি পড়ান। নির্জনে একা থাকা উকিল মুন্সী নিজেই গজল রচনা করতেন এবং উচ্চৈঃস্বরে সুমধুর কণ্ঠে গাইতেন। মধ্যরাতে তাহাজ্জদ নামাজ শেষে তিনি সুমধুর কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াত করতেন ও গজল গাইতেন। এভাবেই রাত পার করতেন।

ইমামতির পাশাপাশি গান-বাজনা করতেন ও গান লিখতেন। বিশেষ দোয়া মাহফিল ও ঈদের নামাজের ইমামতির জন্যও তিনি সুবিদিত ছিলেন। মোনাজাতে বিলাপে বিলাপে এমন সুর ও কথা বলতেন যে, উপস্থিত মুসল্লিরা অঝোরধারায় চোখের পানি ফেলতেন। শৈশব থেকেই তিনি ঘেটুগান, গজল- এগুলোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তৎকালীন ভাটি অঞ্চলে ঘেটুগানের খুব প্রচলন ছিল। তিনি নিয়মিত বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে সারারাত ঘেটুগান শুনতেন। ঘেটুগান তার অন্তরকে নাড়া দিলে ঠিক করেন, নিজেই ঘেটুগান রচনা করবেন ও গাইবেন। কিশোর উকিল মুন্সীর মধুর ও দরাজকণ্ঠে দর্শক-শ্রোতা নিমেষেই মুগ্ধ হতো। তার বয়স যখন ১৮-২০ বছর, তখন থেকেই ঘেটুগানের দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহসহ ভাটি অঞ্চলে বর্ষাকালে ঘেটুগান পরিবেশন করতেন। সুমধুর কণ্ঠের কারণে তিনি খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

অনেকেই প্রশ্ন করেন- তার নাম তো ছিল আব্দুল হক আকন্দ, তিনি কীভাবে উকিল মুন্সী হলেন। এই প্রশ্নের মীমাংসা করা খুব সহজ হবে না। তবে ধারণা করা হয়, উকিল নামটা শৈশবেই তার ডাকনাম হিসেবে যুক্ত হয়ে যায়। মায়ের নাম ছিল উকিলেন্নেসা। তার মা চাইতেন ছেলে লেখাপড়া করুক, উকিল হোক, আইনের লোক হোক। মসজিদে ইমামতি করার পরে মুন্সী যুক্ত হয়েছে।

উকিল মুন্সী হাজারেরও অধিক গান লিখেছেন। বর্তমানে বেশিরভাগ গানের সন্ধান পাওয়া যায় না। তার জনপ্রিয় ও আলোচিত গানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ‘আষাঢ় মাইস্যা ভাসা পানিরে’, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘লিলুয়া বাতাসে’। আমার গায়ে যত দুঃখ সয়, বন্ধুয়ারে করো তোমার মনে যাহা লয়; পুবালি বাতাসে আমি বাদাম দেইখ্যা চাইয়া থাকি, আমার নি কেউ আসেরে; নিলুয়া বাতাসে প্রাণ না জুড়ায় গানগুলো বাংলাদেশের সব শ্রেণির মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়। প্রয়াত নাট্যকার ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ সিনেমায় ওপরের প্রথম দুটি গান ব্যবহারের পর হৃদয় স্পর্শ করা কথা ও সুরের জন্য মানুষের অন্তরে জায়গা করে নেয়। বিংশ শতাব্দীর গ্রামীণ বাংলার জীবনকে নিয়ে রচিত হুমায়ূন আহমেদের বহুকেন্দ্রিক উপন্যাস ‘মধ্যাহ্ন’-এর অন্যতম চরিত্র উকিল মুন্সী।

পিতা-মাতাবিহীন উকিল মুন্সীর মনের অতৃপ্তি, অনাদর-অবহেলা, প্রিয়জনের ভালোবাসাহীনতা, গভীর শূন্যতা থেকেই নিজের মনে বিরহকে লালন করেছিলেন। তিনি প্রাপ্তবয়সে বাউল সাধনায় মগ্ন হন। তার অসংখ্য গান এখনো মানুষের হৃদয়ে স্থান করে আছে। তার গানের দার্শনিক মূল্যবোধ ভাটি অঞ্চলের মানুষের চিন্তাকে ব্যাপক প্রভাবিত করেছে। বাংলা বিচ্ছেদ গানের সাধক পুরুষ তিনি। বাউলগানের জগতে তিনি এমন এক বিচ্ছেদ গানের সুর স্থাপন করলেন- যা স্বতন্ত্র ও অনন্য।

মরমি এই কবি ১৯৭৮ সালের ১২ ডিসেম্বর এ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। উকিল মুন্সীর ইচ্ছা ও নির্দেশনা অনুযায়ী তাকে জৈনপুর গ্রামে বেতাই নদীর কোলঘেঁষা বাড়ির উঠানে পুত্রের সমাধির পাশে দাফন করা হয়। মরমি বাউলসাধক উকিল মুন্সীর সমাধিক্ষেত্রটি বহুদিন অবহেলিত ছিল। এই উকিল মুন্সীর সমাধিক্ষেত্র কীভাবে উন্নয়ন করা যায়, জনগণকে কীভাবে সম্পৃক্ত করা যায়- এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যখন কর্মরত ছিলাম, তখন থেকেই চিন্তা করি। বারবার ওই জায়গায় ছুটে গিয়েছি। তার পুত্রবধূ বাউলসাধক আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী ফুলবানুর সঙ্গে কথা বলেছি। উকিল মুন্সী ও তার পুত্র সাত্তারের সমাধির পাশেই একটি জীর্ণশীর্ণ বাড়িতে আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী বসবাস করতেন। দেখে খুব কষ্ট পেলাম।

প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রায়ই বলেন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড তৃণমূলে ছড়িয়ে দিতে হবে। শত শত বাউলের প্রতিভা গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে আছে। তাই হাওর অঞ্চলসহ উকিল মুন্সীর আঙিনাকে কীভাবে সাংস্কৃতিকবলয়ের মধ্যে আনা যায়- যাকে কেন্দ্র করে গ্রামগঞ্জে সাংস্কৃতিক আবহ সৃষ্টি হবে, তা ভাবতে থাকি। একই সঙ্গে সমাধি ক্ষেত্রটিও সংস্কারের চিন্তা করি। বেতাই নদীর পাড়ে মনোরম পরিবেশে উকিল মুন্সী সাংস্কৃতিককেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলো। ৪ কোটি ২২ লাখ ২৩ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে উকিল মুন্সী সাংস্কৃতিককেন্দ্র নির্মাণের কাজ ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হয়। প্রকল্পের প্রধান কাজগুলো হলো সমাধিস্থল সংস্কার ও উন্নয়ন, সংগীতচর্চার জন্য ভবন, উন্মুক্ত মঞ্চ, নদীর পাড়ে ঘাটলা, সীমানা প্রাচীর, উকিল মুন্সীর পরিবারের জন্য একটি আবাসিক ভবন, দেয়ালে ট্যারাকোটা, দৃষ্টিনন্দন গেট, রান্নাঘর ইত্যাদি। আনন্দের বিষয়, গত ১২ মার্চ সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি দৃষ্টিনন্দন এ স্থাপনাটি উদ্বোধন করেন। অবশেষে সংস্কৃতিমনা ভাটি অঞ্চলের মানুষের বহুদিনের লালিত স্বপ্নের পূর্ণতা পেল।

মরমি বাউলসাধক উকিল মুন্সী স্মৃতিকেন্দ্রের মাধ্যমে বাংলার আবহমানকালের প্রাচীন শিল্প-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যমণ্ডিত লোকসংগীত নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হবে। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করা হবে। মরমি বাউলসাধক উকিল মুন্সী স্মৃতিকেন্দ্রের মাধ্যমে নেত্রকোনা জেলার অন্যান্য বাউলশিল্পী, সাধক ও মনীষীর কর্মময় জীবন, লোকসংগীতে তাদের অবদান জনসমক্ষে তুলে ধরার লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এসব আয়োজনের লক্ষ্য বাংলার লোকায়ত সংস্কৃতির অসাম্প্রদায়িক, উদার ও মানবতাবাদী চেতনায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা। এ ক্ষেত্রে উকিল মুন্সীর মতো অসামান্য বাউলসাধক আমাদের জন্য অফুরন্ত প্রেরণার উৎস।

লেখক: সাজ্জাদুল হাসান, সংসদ সদস্য, নেত্রকোনা-৪ আসন

আরও পড়ুন: মহাসড়কে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে স্কুল শিক্ষক নিহত

শীর্ষ সংবাদ:

ঈদ ও নববর্ষে পদ্মা সেতুতে ২১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা টোল আদায়
নতুন বছর অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে: প্রধানমন্ত্রী
কলমাকান্দায় মোটরসাইকেলের চাকা ফেটে তিনজনের মৃত্যু
র‌্যাব-১৪’র অভিযানে ১৪৫ পিস ইয়াবাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী আটক
সবার সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করুন: প্রধানমন্ত্রী
ঈদের ছুটিতে পর্যটক বরণে প্রস্তুত প্রকৃতি কন্যা জাফলং ও নীল নদ লালাখাল
কেন্দুয়ায় তিন দিনব্যাপী ‘জালাল মেলা’ উদযাপনে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত
ফুলবাড়ীতে ঐতিহ্যবাহী চড়কসহ গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠিত
কেন্দুয়ায় আউশ ধানের বীজ বিতরণ ও মতবিনিময় অনুষ্ঠিত
কলমাকান্দায় দেশীয় অস্ত্রসহ পিতাপুত্র আটক
ঠাকুরগাঁওয়ে গ্রামগঞ্জে জ্বালানি চাহিদা পূরণ করছে গোবরের তৈরি করা লাকড়ি গৃহবধূরা
ফুলবাড়ীতে এসিল্যান্ডের সরকারি মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোন চাঁদা দাবি: থানায় জিডি দায়ের
ফুলবাড়ীতে সবজির দাম উর্ধ্বমূখী রাতারাতি দাম বাড়ায় ক্ষুব্ধ ভোক্তা
ধর্মপাশায় সরকারি রাস্তার গাছ কেটে নিলো এক শিক্ষক
সাঈদীর মৃত্যু নিয়ে ফেসবুকে ষ্ট্যাটাস দেয়ায় রামগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা বহিস্কার
বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়ীতে অনশন
মসিকে ১০ কোটি টাকার সড়ক ও ড্রেনের কাজ উদ্বোধন করলেন মেয়র
কলমাকান্দায় নদীর পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ-বেত শিল্প
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রাবন্ধিক যতীন সরকারের জন্মদিন উদযাপন
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ যতীন সরকারের ৮৮তম জন্মদিন আজ
১ বিলিয়ন ডলার নিয়ে এমএলএম mtfe বন্ধ
কলমাকান্দায় পুলিশের কাছে ধরা পড়লো তিন মাদক কারবারি
আটপাড়ায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ১০৩ জন কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা
নকলায় ফাঁসিতে ঝুলে নেশাগ্রস্থ কিশোরের আত্মহত্যা
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুল ইসলামের রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস
কলমাকান্দায় আগুনে পুড়ে ২১ দোকানঘর ছাই

Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/durjoyba/public_html/details.php on line 809