বুধবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩০

দুর্জয় বাংলা || Durjoy Bangla

ভালো নেই কয়লাখনি আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ বাবলু রায় ধরেছে শরীরে পচন: হারাচ্ছেন স্মৃতিশক্তি

প্রকাশিত: ১০:০৮, ২৬ আগস্ট ২০২৩

আপডেট: ১০:১২, ২৬ আগস্ট ২০২৩

ভালো নেই কয়লাখনি আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ বাবলু রায় ধরেছে শরীরে পচন: হারাচ্ছেন স্মৃতিশক্তি

ভালো নেই খনি আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ বাবলু রায় ধরেছে শরীরে পচন: হারাচ্ছেন স্মৃতিশক্তি

আজ ২৬ আগস্ট। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী কয়লাখনি বিরোধী ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডি দিবস। ২০০৬ সালের আজকের এই দিনে ফুলবাড়ী কয়লাখনি বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশ ও তৎকালিন বিডিআরের ছোঁড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন উপজেলার পৌর শহরের সুজাপুর গ্রামের কামারপাড়ার রিকশা চালক বাবলু রায় (৫২)।

গুলিবিদ্ধ বাবলু রায় এখন পঙ্গুত্ব জীবনযাপন করছেন। তাঁর শরীরের অর্ধেক অংশ অবশসহ ধরেছে পঁচন, হারিয়ে যাচ্ছে স্মৃতিশক্তিও। স্ত্রীসহ তার ৩ সন্তান নিয়ে ভবিষ্যৎ ভাবনায় দিন কাটে বিছানায়।

২০০৬ সালের ২৬ আগস্টের স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে বাবলু রায় বলেন, ‘প্রতিদিনের ন্যায় সেদিন আর রিকশা বের করিনি। সকালে বাড়ী থেকে খাবার খেয়ে তেল-গ্যাস জাতীয় কমিটির ডাক দেওয়া এশিয়া এনার্জির অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলাম। তখন আমার স্ত্রী ৬ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা। ফুলবাড়ীস্থ ঢাকা মোড় থেকে খনি বিরোধী মিছিল বের হলে আমিও তাতে অংশ নেয়। মিছিলটি ছোট যমুনা নদীর সেতু পার হয়ে পশ্চিম পাশে যেতেই পুলিশ-বিডিআর ব্যাপক লাঠিচার্জসহ গুলিবর্ষণ করে। লোকজন দিগি¦দিক ছোটাছুটি শুরু করে। হটাৎ একটি গুলি আমার পিঠে এসে লাগে। আমি রাস্তায় লুটিয়ে পড়ি। এরপর আর কিছু বলতে না পারলেও পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বেডে নিজেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আবিষ্কার করি। রংপুর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, পিজি হাসপাতাল, ক্রমা সেন্টার ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দীর্ঘ ১১মাস চিকিৎসা শেষে হুইলচেয়ারে বাড়ী ফিরি।

বাবলু রায় আরও জানান, বর্তমানে তিনি দীর্ঘ তিন মাস ধরে অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে আছেন। শরীরে পঁচন ধরেছে। প্রতিদিন স্ত্রী সেই ঘাগুলো ধুঁয়ে দেন। আগে হুইলচেয়ারে ভর করে অন্তত বাড়ীর বাইরে বের হতে পারতান। কিন্তু বর্তমানে একবারেই শয্যাশায়ী। বিছানাই এখন আমার নিত্যসঙ্গী। নিজে আয়-রোজগার করতে না পারায় দুইছেলে রাজমিস্ত্রি জোগারীর কাজ করে যা আয় হয় তা দিয়ে অনেক কষ্টের মধ্যে পরিবার চলছে।

আন্দোলনকারীরা মাঝেমধ্যে খোঁজখবর নেন এবং সাধ্যমত সাহায্যও করেন। তবে তেল গ্যাস জাতীয় কমিটির নেতা অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ স্যার সবচেয়ে বেশি খোঁজখবর নেন এবং আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকেন। প্রতিবারে ২৬ আগস্টে হুইলচেয়ারে ভর করে মিছিলে যোগ দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছি। কিন্তু গত ২০২১ সাল থেকে সেটুকুও পরছি না। কারণ শরীর একেবারেই চলছে না। বিছানা থেকেই শ্রদ্ধা জানাবো শহীদদেরকে।

তবে ফুলবাড়ী কয়লাখনি থেকে এক টুকরো কয়লা যেন কোন বহুজাতিক কোম্পানী নিতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহবান জানান এই পঙ্গুত্ববরণকারী বাবলু রায়। তিনি আরো বলেন, এখন আমি আর বেশি কিছু মনে রাখতে পারি না। সবকিছু ভুলে যাচ্ছি দিন দিন। মানুষ চিনতেও এখন সমস্যা হয়। 

আরও পড়ুন: আজ ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডি দিবস


Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/durjoyba/public_html/details.php on line 808