গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে!
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে মিনা আক্তার (২৩) নামে এক গৃহবধূকে কয়েলের আগুন দিয়ে শরীরের নানা জায়গায় ছ্যাঁকা ও মুখে কসটেপ পেঁচিয়ে লাগাতার তিনদিন আটক রেখে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে পাষন্ড স্বামী ইব্রাহীম(২৮) বিরুদ্ধে।
বুধবার(২২ মে) বিকেলে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গিয়ে ওই লোমহর্ষক ঘটনার বিবরণ জানান ভুক্তভোগীর স্বজনরা। গুরুতর আহত মিনা আক্তার উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের ভাদুয়া গ্রামের চাঁন মিয়া ফরাজীর মেয়ে। সে বর্তমানে ৩মাসের অন্তঃসত্ত¡া বলেও জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক। ইব্রাহীম পাশ^বর্তী ধোবাউড়া উপজেলার বহর ভিটা গ্রামের রহমত আলীর ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিনা আক্তার একজন মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী ছিল। ভাদুয়া গ্রামের জামে মসজিদে ইমামতি করতেন ইব্রাহীম মিয়া। মসজিদের কাছাকাছি মিনার বাড়ি ছিল। প্রায় সময়ই নানা অযুহাতে বাড়িতে প্রবেশ করতো। এক পর্যায়ে মিনার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন ইব্রাহীম। প্রেমের সম্পর্ক এলাকায় জানাজানি হলে উভয় পক্ষের সম্মতিতে দেড় বছর পূর্বে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে নরসিংদী চলে যান ইব্রাহীম। সেখানে গিয়ে একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি। ভালোই চলছিল সংসার। ৬মাস না যেতেই মিনার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে ইব্রাহিম। এ নিয়ে সংসারে ঝগড়া ও প্রায়ই মারধর করতো স্বামী। বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে অপারগতার এক পর্যায়ে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে চাকরি নেন স্ত্রী।
হঠাৎ মিনার গর্ভে সন্তান আসায় ওই চাকরি ছেড়ে দেন। এ নিয়ে গত শুক্রবার সকালে ওই পাষÐ স্বামী দুই হাত ও পা বেঁধে, মুখে কসটেপ পেঁছিয়ে টানা তিনদিন মারধর করে শরীরের বিভিন্ন জায়গা কয়েলের আগুন দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়া হয়।
পরে সোমবার এক প্রতিবেশীর সহযোগিতায় নরসিংধী থেকে ভাদুয়া বাবার বাড়িতে গুরুতর অবস্থায় পালিয়ে আসে। আজ মঙলবার পরিবারের লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় দুর্গাপুর থানায় অভিযোগ দাখিলের বিষয়ে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম চন্দ্র দেব জানান, এরকম লোমহর্ষক ঘটনাটি আপনার কাছেই শুনতে পেলাম। এখনো এমন কোন অভিযোগ কেউ থানায় দেয়নি। তবে অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন : পূর্বধলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হলেন যারা
কলি হাসান