স্কুল মিল্ক কার্যক্রম চালু হওয়ায়,ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়ছে
নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় সান্দিকোনা ইউনিয়নে সান্দিকোনা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক মো.মাজাহারুল ইসলাম বলেন, কেন্দুয়ায় একমাত্র আমাদের বিদ্যালয়ে মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের লাইভস্টক অ্যান্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় স্কুল মিল্ক কার্যক্রম চালু হয়েছে। এপ্রকল্প চালু হওয়ায় প্রাক প্রাথমিক থেকে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিদিন বিনামূল্যে দুধ খাওয়ানোতে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের সামান্যতম হলেও ক্ষুধা নিবারন হয় যা পরবর্তীতে ক্লাসে উপস্থিতি বাড়ার পাশাপাশি শিক্ষার মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে জানান তিনি।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে স্কুলে সরেজমিনে খোঁজ খবর নিতে জানা যায়, শিশু শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশ ও পুষ্টির লক্ষ্যে প্রতিদিন দেওয়া হয় বিনামূল্যে দুধ। উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের সান্দিকোনা ক্লাস্টার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৫১ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২১৫-২২০ শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন ২০০ মি.লি প্যাকেটের তরল দুধ দেওয়া হয়। এতে করে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়ার পাশাপাশি পড়ালেখার প্রতি মনোযোগীও হচ্ছে তারা।
স্কুল সূত্রে আরো জানা যায়, নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় ১৮২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে একমাত্র সান্দিকোনা ক্লাস্টার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত ১৩ আগস্ট থেকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের লাইভস্টক অ্যান্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের (এলডিডিপি) আওতায় স্কুল মিল্ক কার্যক্রম চালুকরণ উদ্বোধন করেন, কেন্দুয়া- আটপাড়া আসনের সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল। বর্তমানে প্রতিদিন ১-২ সপ্তাহ পর পর শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয়ে এসব দুধ পৌঁছে দেয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউএইচটি মিল্ক।
১ম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাওন রবিদাস ও ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া আক্তার জানায়, প্রতিদিন দুধ খেতে পেরে আমরা খুবই খুশি। এপ্রকল্প যাতে অব্যাহত থাকে সেই জন্য স্কুলের প্রধান শিক্ষকের জোর দাবি জানান ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা।
উপজেলার সান্দিকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাবুন্নেছা জানান, শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়মিত বিনামূল্যে দুধ প্রদানের উদ্যোগটি মহৎ। এতে করে শিশুদের মেধার বিকাশ ঘটবে। এরমধ্যেই বিদ্যালয়টিতে স্কুল মিল্ক কর্মসূচি চালু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেড়েছে। পড়ালেখার প্রতিও শিশুদের মনোযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে বিগত বছরগুলোর থেকেও এবছর বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার মান আরো বাড়বে বলে মনে করি।
কেন্দুয়া উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম খান বলেন, প্রাথমিকভাবে উপজেলার কেবল একটি বিদ্যালয়ে এস্কুল মিল্ক কর্মসূচি চালু হয়েছে। এর ফলে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি বেড়েছে। এই প্রকল্পটি সরকারের একটি অনন্য উদ্যোগ। পর্যায়ক্রমে কেন্দুয়ার প্রতিটি বিদ্যালয়ে যদি একর্মসূচি চালু করা যায়, তাহলে উপজেলাতে শিক্ষার মান বৃদ্ধি পাবে। যার মাধ্যমে আগামীতে দেশে গড়ে উঠবে আরো সুশিক্ষিত প্রজন্ম।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.ভাস্কর তালুকদার জানান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের লাইভস্টক অ্যান্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় কেন্দুয়ার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছরের জন্য স্কুল মিল্ক কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এটি সরকারের পাইলট প্রকল্প। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য প্রান্তিক এলাকার শিশু শিক্ষার্থীদের পুষ্টি চাহিদা পূরণ ও মেধার বিকাশ ঘটানো। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্য সফল হলে পরবর্তীতে উপজেলার বিভিন্ন স্কুলে এই কর্মসূচি চালু করা হবে বলেও জানান তিনি।