মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১ আশ্বিন ১৪৩০

কলমাকান্দায় ঋণের চাপে ছেলের আত্মহত্যার সাত মাস পর বাবার রহস্যজনক মৃত্যু

প্রকাশিত: ১৭:৫৩, ২০ আগস্ট ২০২৩

আপডেট: ১৮:২৬, ২০ আগস্ট ২০২৩

কলমাকান্দায় ঋণের চাপে ছেলের আত্মহত্যার সাত মাস পর বাবার রহস্যজনক মৃত্যু

কলমাকান্দায় ঋণের চাপে ছেলের আত্মহত্যার সাত মাস পর বাবার রহস্যজনক মৃত্যু

ঋণের চাপে প্রায় সাত মাস আগে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের ব্যস্তপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে গরু ব্যবসায়ী রমজান আলী বিষপানে আত্মহত্যা করেন। এরপর মৃত ছেলের ঋণ পরিশোধে পাওনাদারদের চাপ চাপ আসতে থাকে বাবার কাছে বারংবার।

অবশেষে শনিবার দিনগত মধ্যরাতে বাড়ি থেকে অর্ধ কিলোমিটার উত্তরে মহাদেও নদীর দক্ষিণ পাড়ে অজ্ঞান অবস্থায় আবুল হোসেনকে পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে। রাত ২টার দিকে আবুল হোসেনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সৌরভ ঘোষ মৃত ঘোষনা করেন।

আবুল হোসেনের মৃত্যুকে ঘিরে পরিবারের সদস্যদের মাঝে দেখা দিয়েছে রহস্য। পরিবারের দাবি তার ডান হাতের মাংসপেশিতে শুইয়ের দাগ দেখতে পান তারা।

কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  (ওসি) আবুল কালাম ( পিপিএম) সাংবাদিকদের বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ণয়ে রোববার দুপুরের দিকে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

মৃত আবুল হোসেনের ভাতিজা তরিকুল ইসলাম জানান, প্রায় সাত মাস আগে আমার চাচাতো ভাই রমজান আলী ঋণে চাপ সহ্য করতে না পেরে বিষপনে তার মৃত্যু হয়। ছেলের ঋণ করা অর্থের জন্য চাচাকে (আবুল হোসেন) কাজল মিয়া, ইমান আলী, ইসমাইল, সাত্তার, সফিকুল মিয়া, ইলিয়াসসহ বিভিন্ন লোকজন বাজারে ও রাস্থাঘাটে ঋণ পরিশোধে চাপ প্রয়োগ করে থাকে।

গত শনিবার দুপুরেও বরুয়াকোণা বাজারে ছেলের ঋণ পরিশোধ না করলে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় পাওনাদারেরা। পরে বাড়িতে এসে ছেলের (রমজান) দাফনের সময় অনেকেই পাওনা টাকা মাফ করে দিয়েছিল। এখন তারাই আবার টাকা ফেরত না দিলে হুমকি দিচ্ছে এসব কথা বলেন চাচা (আবুল হোসেন) তার ছোট ভাই মজিবুর রহমানের কাছে।

 ওইদিন (শনিবার) রাত ৯টার দিকে সতেরহাটি গোদারাঘাটে চাচা (আবুল হোসেন) ও আমরা অনেকে চা পান শেষে চা স্টল বন্ধ হয়ে গেলে যে যার মতো বাড়িতে চলে আসি। চাচাও বাড়িতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। আনুমানিক রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমেনা চাচী (মৃতের স্ত্রী) চাচাকে বিছানায় না পেয়ে খোঁজাখুজি করতে থাকেন।

অনেক খোঁজাখুজির একপর্যায়ে পরিবারের লোকজন বাড়ির উত্তরে অর্ধ কিলোমিটার দূরে মহাদেও নদীর দক্ষিণ পাড়ে চাচাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসলে ডাক্তার মৃত ঘোষনা করেন। চাচার ডান হাতের কনুইয়ের দুই-তিন ইঞ্চি উপরের মাংসপেশীতে শুইয়ের চিহ্ন দেখতে পেয়েছি। মৃত্যুর পেছনে কোন না কোন রহস্য লুকিয়ে থাকতে পারে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জনগোষ্ঠী গড়ে তুলছি