
রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
শেরপুরের শ্রীবরর্দী উপজেলার বালিঝুড়ি রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রায় ১০ কোটি টাকা তসরুপ পাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বনবিভাগ।
স্থানীয় বনবিভাগ ও উপকারভোগীদের সুত্রে জানা গেছে,সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের আওতায় বনের বাগান টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। এতে বনবিভাগের নিয়মানুযায়ী গাছ বিক্রির ৪৫% টাকা সরকার, ৪৫% টাকা উপকারভোগী এবং ১০% টাকা নতুন বাগান সৃজনকপ্লে ব্যাংকের নির্ধারিত হিসাব নম্বরে ১০০% টাকা জমাদানের পর ঠিকাদারগণ বাগান কর্তন করবে।
বাগান কর্তনের পর নির্দিষ্ট সময়ের পর স্ব-স্ব উপকারভোগীদের নামে প্রাপ্য টাকার চেক প্রদান করবে স্থানীয় বনবিভাগ।কিন্ত উক্ত কর্মকর্তা প্রথম দু'বছর বিট কর্মকর্তা এবং ৪ বছর একি বিটের রেঞ্জ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত থাকাবস্থায় বাগান বিক্রির প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজেই আত্মসাৎ করেন।
এ ঘটনা ফাঁস হয় সে বদলী হয়ে নিজ জেলা জামালপুরে যাওয়ার পর। তখন ঠিকাদারগণ জানতে পারেন যে,তাদের প্রদানকৃত নগদ কোন অর্থই ওই কর্মকর্তা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজেই ভক্ষণ করেছেন। এমতাবস্থায় ঠিকাদারগণের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ। উচ্চ পর্যাযের ৫ সদস্যের দুটি টিম দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে প্রায় ১০ কোটি টাকা গরমিলের হিসেব পান। এরই ফলশ্রুতিতে ওই রেঞ্জ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন বনকর্তৃপক্ষ।
এদিকে শতশত অসহায় উপকারভোগীরা তাদের অংশের টাকা খোয়া যাওয়ার ভয়ে রেঞ্জ অফিসে দিনরাত টাকা পাওয়ার জন্যে। তদন্ত কমিটিও আসছেন ঘনঘন।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে,ওই কর্মকর্তার চাকুরীকালীন সময়ে সরকারি ও অংশীদার বনায়নের দেড়শতাধিক বাগানের অন্তত ১৬ কোটি টাকায় টেন্ডারে বিক্রি করা হয়। বনের আইন অনুযায়ী বাগান বিক্রিত অর্থ ঠিকাদার সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে গাছ কাটার অনাপত্তিপত্র নিয়ে বাগান কাটার শর্ত থাকলেও এক্ষেত্রে ওই কর্মকর্তা ঠিকাদারদের কাছে থেকে নির্ধারিত টাকা ব্যক্তিগত ভাবে জমা নিয়ে গাছ কাটার মৌখিক অনুমতি দিয়েছিলেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রেঞ্জার রবিউল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উক্ত তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ও সহকারি বন সংরক্ষক সাদেকুল ইসলাম খান সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,ওই কর্মকর্তা কর্তৃক প্রায় ১০ কোটি টাকার গরমিল পাওয়া গেছে। এই প্রেক্ষিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত চলমান থাকায় এরচেয়ে বেশী আর কিছু এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুনঃ ফুলবাড়ীতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগদানের প্রতিবাদে মানববন্ধন
মোহাম্মদ দুদু মল্লিক