হীরা মিয়া। ছবি: রাখাল বিশ্বাস
নেত্রকোনার কেন্দুয়ার রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত নন্দিত কথাসাহিত্যিক প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ এঁর স্বপ্নের স্কুল শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ এসএসসি পরিক্ষায় শিক্ষার্থীরা বরাবরই ভাল ফলাফল করে থাকে। এবারও ২০২৪শে ফলাফল আরও ভাল করেছে।
এবছর ৪৯ জন এসএসসি পরিক্ষার্থী পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৪৮ জন শিক্ষার্থীই জিপিএ-৫ পেয়েছে। যা ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে সপ্তম স্থান অর্জন করে এই বিদ্যাপীঠ। যে জন্য আজ সোমবার (১৩ মে) বিদ্যাপীঠের আয়োজনে দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত বিদ্যালয় প্রাঙ্গন চলে আনন্দ উৎসব।
সেখানে অনুষ্ঠানের ফাঁকে খুঁজেছি জিপিএ-৫ না পাওয়া সেই একজন শিক্ষার্থীকে। পরে বিদ্যালয়ের কিছু দূরেই বঙ্গবাজার, সেখানে তার বাবা কলসহাটী গ্রামের সাইকুল ইসলামের চায়ের দোকান। তারই ছেলে হীরা মিয়া অল্পের জন্য জিপিএ-৫ পায়নি। সেই চায়ের দোকানে গিয়ে পেলাম তাকে।
হীরা মিয়া পড়ালেখার পাশাপাশি বাবাকে সাহায্য করতে চায়ের দোকানে বসে দোকানদারি করে। তাকে দোকানেই পেলাম তার বাবা ছিলেন না।
আমরা ক'জন সংবাদকর্মি শান্তনা দিয়ে কথা বলি তার সাথে। জানলাম তাদের সম্পর্কে।
সাইকুল ইসলামের এক ছেলে এক মেয়ে। মেয়ে ৪র্থ শেণীর ছাত্রী আর ছেলে হীরা মিয়া শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ থেকে এবার এসএসসি পরিক্ষা দিয়ে পাস করে। তার ফলাফল ৪.৮৩। হীরা মিয়ার সহপাঠিরা সবাই জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে জিপিএ না পাওয়ার বেদনায় অত্যন্ত বিমর্ষ- ভারাক্রান্ত।
মনের কষ্টে সে বিদ্যালয়ের আনন্দ উৎসবে যায়নি। আমরা তার কথা শুনলাম, শান্তনা দিলাম এবং তাকে স্বপ্ন দেখিয়ে বললাম,তুমি তো ফেল করোনি। দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে জিতেছো,খুব বেশী করে জিতেছো।
তোমার দিকেই তাকিয়ে আছি আমরা এবং দেশ। তুমি ভেঙ্গে পড়ো না, কলেজে ভর্তি হও, নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাও- বিজয় তোমার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। তোমার পাশে সবাই আছে আমরাও আছি। শুভ হোক তোমার আগামী দিন।
তার মনের কষ্টের কথা জানান বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ছেলেটা খুবই কষ্ট পেয়েছে। আমরা তাকে শান্তনা দিয়েছি এবং অনুষ্ঠানে আনার চেষ্টাও করেছি। গরীব ঘরের সন্তান,খুবই মেধাবী,আগামী দিনে ভাল কিছু করার জন্য আমরা তার পাশে থাকবো।