শুক্রবার ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪ আশ্বিন ১৪৩০

দশটি গ্রামের মানুষের চলাচল এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে আর কতদিন?

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:২৫, ২৭ এপ্রিল ২০২৩

দশটি গ্রামের মানুষের চলাচল এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে আর কতদিন?

দশটি গ্রামের মানুষের চলাচল এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে আর কতদিন?

কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ী বাজার থেকে বঙ্গবাজার হয়ে আঠারোবাড়ী রায়ের বাজার পর্যন্ত রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন রায়ের বাজার, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ থেকে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পণ্য পরিবহণ করে থাকলেও বর্তমানে বন্ধ আছে। রোয়াইলবাড়ী তাতিপাড়া এলাকায় বেতাই নদীর উপর ব্রীজটি ধসে যাওয়ায় ওই রাস্তায় এক বছরের অধিক সময় ধরে ব্যবসায়ীদের পন্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে।

বিকল্প উপায়ে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ওই নদীর উপর জোড়াতালি দিয়ে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দেয়া হলেও ওই বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে ভারি কোন যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এর ফলে একদিকে যেমন ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে ভীষণ বেকায়দায় অন্যদিকে কৃষক ও সাধারণ জনগনসহ স্কুল কলেজ মাদ্ধসঢ়;রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় সাঁকোর উপর দিয়ে চলাচল করছেন।


কথা সাহিত্যিক ড. হুমায়ুন আহম্মেদ তার নিজ গ্রাম কুতুবপুরে গ্রামের ছেলেমেয়েদেরকে আধুনিক ও বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য গড়ে তুলেছেন শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ। এই বিদ্যালয়টির ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিবছর mজে.এস.সি ও এস.এস.সি পরীক্ষায় শতভাগ পাশ করে উপজেলায় সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে স্থান দখল করে আছে। কিন্তু ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরাও বেতাই নদীর উপর ব্রীজটি না থাকায় নিরাপদে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করতে পারছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্র ছাত্রী বলেন, সামনে বর্ষাকাল। এই বর্ষাকালে সাঁেকার উপর দিয়ে পারাপার হওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকসময় বাঁশের সাঁকো থেকে ছিটকে গিয়ে পানিতে পরতে হয়।

একই কথা রোয়াইলবাড়ীর ফাজিল মাদ্ধসঢ়;রাসার ছাত্র ছাত্রী ও শিক্ষকদেরও। রোয়াইলবাড়ী, রাজনগর, কলসাটি, আমতলা, কুতুবপুর, ফতেপুর, নিলাম্বরখিলাসহ ১০টি গ্রামের প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ এই সাঁকোর উপর দিয়ে চলাচল করেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। কিন্তু নদীর উপর ব্রীজটি নির্মাণে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই।

রোয়াইলবাড়ি আমতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান আকন্দ জানান, এই ব্রীজটি নির্মাণ না হওয়ায় এখন ইউনিয়ন বাসীর বিষফোড়া। তিনি বলেন, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারে এই ব্রীজটি নির্মাণ খুব জরুরী। তাছাড়া স্কুল কলেজ মাদ্ধসঢ়;রাসার ছাত্র-ছাত্রীরাও প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকোর উপর দিয়ে চলাচল করে। তিনি দাবি করে বলেন, ব্রীজটি
নির্মাণের জন্য কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের সমন্বয় কমিটির সভায় দফায় দফায় দাবি জানানো হয়েছে।

তাছাড়া নেত্রকোণার এলজিইডি’র নির্বাহীর প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করে ব্রীজটি নির্মাণে দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার দুপুরে এলজিইডি’র কেন্দুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোয়াজ্জেম হোসেনের সাথে এই ব্রীজটি নির্মাণের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোয়াইলবাড়ী বাজার থেকে বঙ্গবাজার হয়ে আঠারোবাড়ী রায় বাজার পর্যন্ত রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনুর্ধ্ব ১শ মিটার প্রকল্পের আওতায় এই ব্রীজটি নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নেত্রকোণা- ৩ আসনের সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল ও প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছেন ব্রীজটি নির্মাণের জন্য। মোট কথা আমরা সব দিক থেকে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। 

রেও পড়ুন: কলমাকান্দায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত

এসবি