মো: এখলাছ মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
নেত্রকোনার মদনে আগুনে দগ্ধ হয়ে মো. এখলাছ মিয়া (৩৩) নামের বিদেশ ফেরত এক ব্যক্তি আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গতকাল শনিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, গত ১৩ নভেম্বর উপজেলার বাড়রী সুতিয়ারপাড় গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে এখলাছ মিয়া আগুনে দগ্ধ হন। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাহালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় গত ১৫ নভেম্বর এখলাছের চাচাতো ভাই মো. জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে মদন থানায় হত্যা চেষ্টার মামলা করেন। মামলায় এখলাছের স্ত্রী মোছা. মুক্তা আক্তার (২৮), শ্বশুর মো. খায়রুল ইসলাম (৫৫) ও শাশুড়ি মোছা. লুৎফুন নেছাকে (৫৫) আসামি করা হয়।
মৃত এখলাছ মিয়া কেন্দুয়া উপজেলার পাছর মাইজপাড়া গ্রামের মৃত আলী আমজাদ খাঁর ছেলে।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাওহীদুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, এখন আগের হত্যাচেষ্টা মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। আসামিরা পলাতক রয়েছে। তবে তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য এখলাছের লাশ ঢামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বাদী ও এখলাছের চাচাতো ভাই জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বিদেশে থেকে উপার্জিত সব টাকা এখলাছ স্ত্রীর কাছে পাঠাতেন। দীর্ঘদিন বিদেশে থেকে দেশে ফিরে টাকার হিসাব চাইতেই তাঁর স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়ি ক্ষিপ্ত হন। একপর্যায়ে তাঁর স্ত্রী মুক্তা চট্টগ্রাম পালিয়ে যান। সেখানে গিয়ে বাসা ভাড়া করে থাকতেন মুক্তা। বাসার মালিককে দিয়ে চাপ সৃষ্টি করে মুক্তাকে ১১ নভেম্বর এলাকায় ফেরত নেন এখলাছ। পরদিন রাতে নিজের বাড়ি ডেকে নিয়ে বাবা-মাসহ কয়েকজনের সহায়তায় এখলাছের গায়ে আগুন দেন মুক্তা। পরে বিষয়টিকে আত্মহত্যার চেষ্টা বলে প্রচার করে তারা। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।’
এখলাছের ভাতিজা পিয়াস আলম বলেন, ‘এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা। মৃত্যুর আগে হাসপাতালে চাচা সব বলে গেছেন। চাচার শ্বশুর খায়রুল ইসলাম খুব খারাপ মানুষ, এটা এলাকার সবাই জানে। বিয়ের পর মিষ্টি কথায় ভুলে টাকাপয়সা স্ত্রীকে দেওয়ার পর তিনি সেই ভুলটা বুঝতে পেরেছিলেন। তাঁরা চাচাকে কৌশলে হত্যা করেছেন। আমরা এর বিচার চাই।’