রামগঞ্জে টিসিবি’র পণ্য বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ
লক্ষীপুরের রামগঞ্জে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে ফ্যামিলি কার্ড ছাড়া টিসিবি’র ৩৯ পন্য বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে ডিলার আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে। কার্ডধারীদের মাল উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত স্টাফদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কার্ডধারিরা। এঘটনায় পন্য না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়েছে কার্ডধারীদের।
গতকাল দুপুরে দিকে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে গিয়ে দেখা যায়, পৌর এলাকার আঙ্গার পাড়া ওয়ার্ডের ৬শত তিনজন কার্ডধারীদের মধ্যে এসব পন্য বিক্রি করার কথা থাকলেও তা মানেননি ডিলার। ট্রাকে টিসিবি’র ৩৯ পন্য বিক্রি করছে ডিলার আক্তার হোসেন।
স্থানীয় সুবিধাভুগীদের দাঁড় করিয়ে রেখে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি নিয়ে উপজেলার স্টাফদের কাছে পন্য বিক্রি করছেন তিনি। এসময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সিএ ফয়েজ আহমেদকে বস্তাবর্তী টিসিবির পন্য নিয়ে দৌড়ে যেতে দেখা গেছে।
এসময় ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকের ক্যামরা কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করেন ফয়েজ আহমেদ । এছাড়া অফিস সহায়ক শামিমকেও টিসিবি’র ৩৯ পন্য কিনতে দেখা গেছে। এসময় ডিলারের ব্যবহৃত ট্রাকে টিসিবি’র ৩৯ পন্য বিক্রি সম্বলিত কোন ব্যানার, পেস্টুন কিংবা সাইনবোর্ড দেখা যায়নি। আরেক স্টাফ শামিম হোসেন বলেন, মামা (উপজেলা চেয়ারম্যান) ডিলারকে বলে দিয়েছে। তাই পন্য কিনেছেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পৌর ৯ নং ওয়ার্ড আঙ্গারপাড়া ওয়ার্ডে ৬শত তিন জন কার্ডধারীর জন্য টিসিব্#ি৩৯;র পন্য বরাদ্দ দিয়ে তা, বিক্রি করার দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট ডিলারকে। পন্য না পেয়ে ফেরত যাওয়ার সময় আছমা আক্তার, মায়া আক্তার, মানিক হোসেন সহ ১০/১২ জন সুবিধাভোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কার্ড দিলে লাভ কী? সব মাল এখানকার স্টাফরা নিয়ে যায়। এভাবে পরপর তিনবার ফেরত যাচ্ছে তারা।
ডিলারের লোকজন জানায়, উপজেলার দেড়শ স্টাফকে দিতে হয়েছে। না দিলে তো ডিলারই থাকবে না। মালামাল শেষ হয়ে গেছে তাই আমরা চলে যাচ্ছি। অভিযুক্ত ডিলার আক্তার হোসেন বলেন, আজ এ ওয়ার্ডের জন্য ছয়শত তিন কার্ডের সমপরিমাণ পন্য এনেছেন তিনি। উপজেলার সকল স্টাফরা মাল নিছে।
কার্ড শেষ হয়ে গেছে, তারপরও কিছু মাল রয়ে গেছে। তাই যে কোন আইডি কার্ড জমা দিলে মাল দিয়ে দি। এখানে দুই ঘন্টা বিক্রি করার কথা ছিল। এখন সময় শেষ। পৌর ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মেহেদী হাসান শুভ বলেন, বিক্রি কেন্দ্র উপজেলা প্রাঙ্গনে হওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের স্টাফরা এর আগেও এভাবে নিয়ে গেছে।
ফলে সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছে আমার এলাকার কার্ডধারীরা। বিক্রি কেন্দ্র উপজেলা প্রাঙ্গন থেকে অনত্রে সরিয়ে দিলে প্রকৃত কার্ডধারীরা উপকৃত হবে বলে মনে করেন তিনি।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন চৌধুরী এ ঘটনায় লেখালেখি না করার অনুরোধ করে বলেন, আঙ্গার পাড়া ওয়ার্ডের জন্য পন্য গুলো বরাদ্দ হলেও স্টাফরা গরিব মানুষ। তাই তারা কিনেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মোছাঃ শারমিন ইসলাম বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। এভাবে টিসিবি’র ৩৯;র পন্য নেয়ার কোন সুযোগ নেই। এঘটনায় সংশ্লষ্ট সবার সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: র্যাবের হাতে ৭২ কেজি গাঁজা ও ৩৭৫ পিস ইয়াবাসহ এক মাদক কারবারী আটক