
নিহত রয়েল আহমেদ হৃদয়। ছবি: সংগৃহীত
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় সহপাঠীদের অতর্কিত হামলা ও ছুরিকাঘাতে রয়েল আহমেদ ওরফে হৃদয় (১৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। নিহত হৃদয় উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের বন গাবী গ্রামের আক্কাস মিয়ার ছেলে।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরো তিনজন। আহতরা হলেন, উপজেলার বন গাবী গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে শামীম মিয়া (১৯), একই গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে অন্তর মিয়া (১৯) ও আব্দুর রবের ছেলে শাজন মিয়া (১৩)। তাদেরকে প্রথমে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তী করা হয়। পরে আশংকাজনক অবস্থায় শামীম মিয়া ও অন্তর মিয়াকে রাতেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
শনিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার গাবী গ্রামের হিফজুল কুরআন আশরাফি মাদ্রাসার বার্ষিক ইসলামিক ওয়াজ মাহফিলের অদূরে অস্থায়ী একটি চটপটির দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। আটককৃতরা হলেন, একই ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের ফজলু মিয়ার ছেলে রিফাত মিয়া (১৯), একই গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছেলে তায়িন মিয়া (১৯), আব্দুল মোতালিবের ছেলে সজিব মিয়া(১৯) ও পার্শ্ববর্তী বারহাট্রা উপজেলার ইসপিনজাপুর গ্রামের রতন মিয়ার ছেলে মাসুদ রানা (২২)।
পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের বন গাবী গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে অন্তর মিয়া ১৮) ও একই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছেলে তায়িন মিয়া (১৮) তারা দুইজনই স্থানীয় বাদশাগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।
গত ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে গিয়ে পরীক্ষা হলে কে কোন আসনে বসবে এ নিয়ে তারা দুইজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। তখন তাহিন মিয়া অন্তর মিয়াকে দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়েছিলন। এর পর থেকেই তাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এরই মধ্যে শনিবার সন্ধ্যা থেকে গাবী গ্রামের হিফজুল কুরআন আশরাফি মাদ্রাসার উদ্যোগে বার্ষিক ইসলামিক ওয়াজ মাহফিল চলছিল। অন্তর মিয়া ও হৃদয় হাসানসহ তারা ৫-৬ জন সহপাঠী গ্রামের ওই ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে অংশ নেন। ওয়াজ মাহফিল শুনার এক পর্যায়ে রাত ১০টার দিকে তারা সবাই মাহফিলের অদূরে অস্থায়ী একটি চটপটির দোকানের সামনে গিয়ে দাঁড়ান।
এসময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষের তাহিন মিয়া তার সহপাঠীদের নিয়ে ছুরিসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিতভাবে অন্তর মিয়া ও রয়েল আহমেদ হৃদয়দের উপর হামলা চালায়। হামলায় প্রতিপক্ষের উপোর্যপরি ছুরিকাঘাতে ঘটনাস্থলেই রয়েল আহমেদ ওরফে হৃদয়ের মৃত্যু হয়। এ হামলায় শামীম মিয়া, অন্তর মিয়া ও শাজন মিয়া গুরুতর আহত হন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় এ ঘটনার সাথে জড়িত ৪জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এনামুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রবিবার দুপুর আড়াইটার দিকে বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। রবিবার সকালে নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটক ব্যক্তিদেরকে মামলা দায়েরের পর আদালতে সোপর্দ করা হবে বলেও জানান তিনি ।
আরও পড়ুন: মোহনগঞ্জের গাগলাজুর বাজারে সিপিবির সমাবেশ অনুষ্ঠিত
হাফিজুর রহমান চয়ন