
পূর্বধলায় মা-মেয়ের রহস্যজনক মৃত্যু
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার ধলামূলগাঁও ইউনিয়নের চুরাটিয়া গ্রামে মা-মেয়ের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। নিহতরা হলেন রূপালী আক্তার (২৭) এবং তার সাত বছরের মেয়ে রুবাইয়া তাবাসসুম মুন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে পুলিশ তাদের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত রূপালী আক্তার ওই গ্রামের মোস্তাকিনের স্ত্রী এবং জারিয়া ইউনিয়নের বারহা গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঘটনাটিকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু বলে দাবি করলেও খাটের ওপর মরদেহ পাওয়া যাওয়ায় নিহতের পরিবারের সদস্যরা ঘটনাটিকে রহস্যজনক মনে করছেন।
রূপালীর বাবা আব্দুর রশিদ অভিযোগ করেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি জানান, প্রায় ১০-১২ বছর আগে তার মেয়ের বিয়ে হয়। তার জামাই মোস্তাকিন ফায়ার সার্ভিসে চাকরি করেন এবং বর্তমানে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কন্ট্রোল রুমে কর্মরত। তাদের সংসারে দুই মেয়ে রয়েছে।
সম্প্রতি মোস্তাকিন গ্রামের বাড়িতে তিন কাঠা জমি কেনার পর তার ছোট ভাই হুমায়ুনকে মৌখিকভাবে চার শতক জমি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। গত ১৫ দিন আগে ওই কলহের জেরে রূপালীকে মারধর করে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। দুইদিন পর আব্দুর রশিদ তার মেয়েকে আবার স্বামীর বাড়িতে রেখে আসেন। মঙ্গলবার সকালে তিনি তার মেয়ে ও নাতনির মৃত্যুর খবর পান।
এ বিষয়ে রূপালীর শাশুড়ি আমেনা খাতুন জানান, প্রতিদিনের মতো রূপালী তার দুই মেয়ে—রুবাইয়া তাবাসসুম মুন ও দুই বছরের তাহমিনা আক্তার মুনিয়াকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল সাতটার দিকে ঘুম থেকে না ওঠায় তিনি ডাকতে যান এবং দেখেন খাটের ওপর রূপালী ও রুবাইয়া মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ছোট মেয়ে তাহমিনা তার মৃত মায়ের পাশে বসে ছিল।
রূপালীর স্বামী মোস্তাকিন সব অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, তার স্ত্রী ও সন্তান বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন।
ঘটনাস্থলে নেত্রকোনা থেকে সিআইডি এবং পূর্বধলা থানার পুলিশের একটি দল এসে তদন্ত শুরু করেছে। নেত্রকোনা জেলা পুলিশ সুপার মির্জা ফায়েম মাহমুদ জানান, নিহতদের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। রূপালীর ডান হাতে আগুনে পোড়ার চিহ্ন, দুই পায়ের গোড়ালির ওপরে ও দুই হাতের কব্জির ওপরে কালো দাগ রয়েছে। একইভাবে তার মেয়ে রুবাইয়ার ডান পায়ের গোড়ালি ও দুই হাতের কব্জির ওপরে কালো দাগ দেখা গেছে।
পুলিশ মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। পুলিশ সুপার জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
আরও পড়ুন: শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের ময়মনসিংহ মহানগরের কমিটি ঘোষণা