![তেল ও অপ্রয়োজনীয় উপদেশ তেল ও অপ্রয়োজনীয় উপদেশ](https://www.durjoybangla.com/media/imgAll/2023April/ও-অপ্রয়োজনীয়-উপদেশ -2305011544.jpg)
তেল ও অপ্রয়োজনীয় উপদেশ
নিজের চরকার তেল যখন অন্য কেউ মেরে দেয়। তখন চরকা মালিকের আরাম আনন্দ লাগে। সমাজে পরিচিতিও বাড়ে। তিনি কেউকেটা টাইপের কিছু একটা হয়েছেন,এ উপলব্ধির উদ্রেক হয়। যাদের কারণে নিজেকে এলিট মনে হল তারা দুই প্রকারের। একদল কেউকেটার অধস্থরের আরেক দল উচ্চস্থরের। বড় দল হয় নিম্ন স্থরের লোকদের। এসব লোকের নিজস্ব চরকা নেই।
পরের তেলে নিজের শরীরের তেজ বাড়াতে এরা আসে। কেউকেটার গায়ে তেল ঘষতে ঘষতে সুযোগ পেলে নিজেরা একটু মেখে নেয়। কেউকেটার উন্নতিতে তাদের আনন্দ। যদি কেউকেটার আশীর্বাদে নিজেদের ছোটখাট উপকার হয়। যেমন কর্মক্ষেত্রে সুবিধা,বউয়ের বদলি,মেয়ের একটা মেডেল,ছেলের একটা ভাল স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা। এইতো আর কী চাই। কেউকেটা সামান্য অনুগ্রহ দিয়ে বন্ধু নামক দাসকে কিনে নেন। ব্যাংকের নগদ ঋণ শোধ হয়।কিন্ত কেউকেটা বন্ধুর অনুগ্রহের ঋণ মৃত্যুর পরও টিকে থাকে। বউ বাচ্চাদের এঋণের বোঝা বহন করতে হয়। তারা জানে তবুও মানে না আজকের তাজা ছবি একসময় কষ্ট দেবে।
কেউকেটাকে বলি তেল নিচ্ছেন ভালো কথা। একটু যাচাই করে নিন। খোলা বাজারের তেল সম্ভাবনাময় ইঞ্জিনটার বারোটা বাজিয়ে দেবে। ভালোমানের তেল নিন সমৃদ্ধ হবেন। আপনি জানেন সংবর্ধনার নামে যারা আপনাকে তেল দিতে এসেছে সবাই মতলববাজ। একদল আপনার কাঁধে সওয়ার হতে চায় আরেক দল দেখতে চায় আপনি কতটুকু এগিয়েছেন তার চেয়ে। গলায় মালা পরানোর ছলে ফাঁসের মাপটা নিয়ে রাখে। এমন বন্ধুর ফাঁসের শিকার হয়েছেন কত রথি মহারথি।
ভাবছেন জ্ঞান দিচ্ছি ! মোটেই না। আপনার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমিও ছিলাম। প্রফুল্লময়ীর তালিকায় আমার মিসেসও ছিলেন। আপনার অনুষ্ঠান উপভোগ করেছে আমাদের নিষ্পাপ শিশুরা। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকেই আপনাকে আপনার স্ত্রী সন্তান কে ঈর্ষাই করেছে। জমিয়ে রেখেছে হিংসা। আপনার পতনে সবার আগে খুশি হব আমরা। এক বেঞ্চে বসে মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে আপনি মঞ্চে আর আমি বেঞ্চে এটা হতে পারে না।
তেতো কথা কারোর ভাল লাগে না। মিষ্টির মাঝেই সুখ। জন্মে মিষ্টি,মৃত্যুর সময়ও মিষ্টি। অফিসে মিষ্টি বাসায় মিষ্টি, শ্মশানেও মিষ্টি। মিষ্টি কোথায় নেই ? পিপড়া আর মিষ্টির জন্যই দুনিয়া। তেতো উবেই গেছে সংসার থেকে। মানেটা সবাই জানে তেতো মানে সত্য। সত্য বলতে কিছুই নেই। সত্য স্বর্গীয় শব্দ। মর্ত্যে অচল সত্য। মিথ্যাই সত্য পৃথিবীতে। যিনি সুন্দর করে মিথ্যাচার শিখেছেন তিনিই নেতা তিনিই ভ্রাতা, তিনিই ত্রাতা। হিমালয় এখন সাধনার জায়গা নয়। ওটা পর্যটন স্পট। তাই তো মুনি ঋষি আসন গেড়েছেন ইউটিউবে। আরণ্যক লিখতে নতুন বিভূতিভূষণ কে বনে যেতে হবে না। গুগল চ্যাটজিপিটি ই সহায়।
বলছিলাম ওহে মাননীয় কেউকেটা, এইসব সস্তা সংবর্ধনা স্মার্ট বাংলাদেশে মানায় না। জীবন বিপন্ন ছিল বিশ বছর আগে ক্ষুধা আর তৃষ্ণায়। মন্দিরের ফাও খাবার খেয়ে যে বাঙালি বড় হয়েছে তার ভেজাল তেলে ভরসা রেখ না। এগিয়ে যাও অমৃতের সন্ধানে। বিশ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া বদনা খোঁজতে বাঁশবাগানে আর এসো না।
আরও পড়ুন: ওরা কে কি ধরনের সাংবাদিক?
রম্যলেখক