বাউল কবি দ্বীন শরৎ ভিটায় তাঁর কোন স্মৃতি চিহ্নই নেই
বাউল কবি দ্বীন শরৎ। তাঁর রচিত গান দেশে বিদেশে গবেষনা চলছে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হয় তাঁর রচিত গান, কীর্তন। কিন্তু গুণী এই বাউল সাধকের ভিটায় তাঁর কোন স্মৃতি চিহ্নই নেই।
বাংলা ১২৯৪ সালে কেন্দুয়া উপজেলার সাজিউড়া গ্রামে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। এখানেই তিনি দীর্ঘদিন গান রচনা ও গান পরিবেশন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বাংলা ১৩৪৮ সালে তিনি তিনি চলে যান না ফেরার দেশে।
জানা যায় গুণী এই বাউল সাধকের জীবদ্দশায় তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের অর্থ মন্ত্রী নলিনী রঞ্জন সরকারের ছোট ভাই পবিত্র রঞ্জন সরকার দায়িত্ব নিয়ে তিনটি বই প্রকাশ করেছিলেন। পালা নাট্যকার ও দ্বীন শরতের মালজোড়া গান বইয়ের রচয়িতা সাংবাদিক রাখাল বিশ্বাস বলেন, দ্বীন শরতের বাউল গান, এসলাম সঙ্গীত ও গৌড় গীতি নামক তিনটি বই পবিত্র রঞ্জন সরকার প্রকাশ করেছিলেন। দ্বীন শরৎকে কলকাতায় একটি সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল সে সময়ে। সেই একটি চিঠির নিদর্শন আমার বইটিতে প্রকাশ করেছি।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এমন একজন গুণী বাউল সাধক যার ভিটে বাড়ীতে তাঁর কোন স্মৃতি চিহ্নই নেই। এই যে না থাকাটা এটা আমাদের জন্য খুবই দুঃখ জনক। আশা করি সরকার, প্রশাসন উদ্যোগী হয়ে দ্বীন শরতের স্মৃতি চিহ্ন টুকু রক্ষার ব্যবস্থা করবেন।
বাউল কবি ও গবেষক শেখ মো: শহীদুল্লাহ বলেন, আমার কাছে দ্বীন শরতের বাউল গান ও এসলাম সঙ্গীতের আদি দুইটি বই সংরক্ষিত আছে। সিলেটের সজল কুমার দ্বীন শরৎ ও তাঁর গান মানব মঙ্গল নামে একটি বই প্রকাশ করেন। সাজিউড়া গ্রামের চিত্ত রঞ্জন দাস বলেন, দ্বীন শরতের বাড়ী আমাদের বাড়ীর সামনেই ছিল।
তিনি তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের অর্থ মন্ত্রী নলিনী রঞ্জন সরকারের দান করা একটি বাড়ীতে থাকতেন। সেখানে থেকেই গান রচনা ও গান গাইতেন। তাঁর গান এখনো বিভিন্ন বাউল গানের আসর ও বৈঠ্যকি কির্ত্তন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ও হাট বাজারে গেয়ে থাকেন বাউল শিল্পীরা।
তিনি যে বসত ভিটাটিতে থাকতেন সেটি এখন আমাদের আওতায় আছে। তবে বাউল দ্বীন শরতের স্মৃতি রক্ষার্থে কোন স্থাপনা করা হলে সেখানে আমাদের কোন আপত্তি থাকবে না। বাউল সাধক আব্দুল মজিদ তালুকদারের ছেলে আবুল বাশার তালুকদার গত ২৫, ২৬, ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত জালাল মেলায় বাউল কবি দ্বীন শরৎ, বাউল কবি প্রভাত সুত্রধর ও বাউল কবি আবেদ আলীর স্মৃতি রক্ষার্থে তাদের জন্ম ভিটায় স্মৃতি পলক নির্মানের দাবি জানান।
আবুল বাশার তালুকদার কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমদাদুল হক তালুকদারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, জালাল মেলা করে প্রমাণ করেছেন আপনিই পারবেন। তাই সমস্ত বাউল শিল্পীদের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানাই তিন বাউলের স্মৃতি ভাস্কর্য নির্মানের দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমদাদুল হক তালুকদার এর জবাবে বলেন, কেন্দুয়া বাসীকে সঙ্গে নিয়েই এসব কাজ সম্পাদন করতে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করবো।