জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: সংগৃহীত
মানুষের জীবন খুব অদ্ভুত। যেখানের আঁকে-বাঁকে ভরপুর বিচিত্রতা। আর এই বিচিত্র জীবনে ঘটে অসংখ্য সব বিচিত্র ঘটনা। হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, দুঃখ-সুখ, ভালো-মন্দের মিশেলে এগিয়ে চলে জীবন খরস্রোতা নদীর মতো। কখনো মুক্ত পাখির মতো, কখনওবা চুপসে যাওয়া ফুলের মতো। হারিয়ে যায় কত চেনা মুখ, কতশত স্মৃতি। নীল নীলিমায় দূরে কোথায় মন যে হারায় ব্যাকুলতায়। একটা কথা-ই মন জানতে চায়, 'মন কেন স্মৃতির পাহাড় হাতড়াই ’ মানুষের জীবন তো একটাই।
অথচ এ জীবনে কত কিছুই না ঘটে যায়। জীবনের একেকটা মুহূর্ত যেনো একেক রকম মনে হয়। কখনো জমাট বরফের মতো কষ্টগুলো বুকের মধ্যে জমতে থাকে। জীবনটা বড় অসহ্য মনে হয় তখন। মনে হয় এ জীবনের কী দরকার ছিলো? আবার কখনো জীবন ভরে যায় অনাবিল সুখ আনন্দে; তখন মনে হয় জীবন কেন দ্রুত ফুরিয়ে যায়!
একটা সময় জীবনের পুরনো অনেক স্মৃতি মনে পড়ে যায়। মনে হয় পুরনো দিনগুলিই বুঝি সুন্দর ছিলো। মনের পর্দায় এসব স্মৃতি হাতড়াতে বড় ভালো লাগে, একা আনমনে। মনটা বাস্তবে ফিরে আসতে চায় না।
কিন্তু বাস্তবে তো আসতেই হবে। আসলে বাস্তবই সব, কল্পনা নিছক একটা মায়া। কল্পনা যদি সত্যি হতো, মানুষের দুঃখ-কষ্ট কিছুই থাকতো না। তবে কষ্ট যে সবসময় খারাপ লাগে তা নয়। অনেক সময় কষ্ট পেতেও অনেক ভালো লাগে। কেন ভালো লাগে তা জানি না।
এবার আমার জীবনের সংক্ষিপ্ত গল্প শেয়ার করি:
আমার জম্ম গ্রহণ ছিল সাদামাটা মধ্যবিত্ত পরিবারে।ইনশাআল্লাহ পরিবারের আকাশচুম্বী নাম ডাক না থাকলেও ছিলনা কলঙ্কময় কোন অধ্যায় আল্লাহর কাছে অশেষ মেহেরবানি। শৈশব কৈশর কেটেছে গ্রামীণ জনপদে যেখানে ছিল আবেগ ভালোবাসা ও প্রকৃতির সাথে । শিক্ষা জীবনের অনেক বছর নিজ জম্ম স্থানের বাইরে অতিবাহিত হয়েছে। এস এস সি গণ্ডি পেরিয়ে চট্টগ্রাম শহরে আগমন, আবারো পড়ালেখার যুদ্ধে নেমে পড়ি পাশাপাশি শুরু হয়ে যায় কর্মজীবন।
একটা সময় শুরু হয়ে যায় জীবন নামক যুদ্ধ, চলতে থাকে অবিরাম বছরের পর বছর। কর্মজীবনে অনেক গুলো বাস্তবতার কথা মনে পড়ে যেমন, 'মানুষ বহুরূপী' মানুষ আপনার সামনে যে ভালোবাসা দেখায় সেটা প্রকৃত ভালোবাসা না, তার পিছনে আরেক রুপ। আমি এমনই দেখেছি আমার সামনে সে আমার জন্য অনেক ত্যাগী কিন্তু দীর্ঘ ১০/১২ বছর পরে জানতে পারি সে আমার ক্ষতির মুল নায়ক ছিলেন।
এই অল্প জীবনে অনেক গুলো দেশে ভ্রমণ করার সুযোগ হয়েছে, আগামী দিন গুলোতে আরো অনেক গুলো দেশ ভ্রমণ করার স্বপ্ন আছে, বিভিন্ন দেশের কালচার কালচার জীববৈচিত্র ও প্রকৃতি দেখার ও জানার ইচ্ছা আছে।
বাস্তবতা হচ্ছে, 'জন্ম ও মৃত্যু একটি অপূর্ণাঙ্গ সত্য' পার্থিব জীবনের পর মানুষের জন্য অপেক্ষা করছে এক অন্তহীন জীবন। যে জীবন অন্তহীন, অনন্ত। পৃথিবীর প্রায় সব ধর্মে মৃত্যু-পরবর্তী এ জীবনের স্বীকৃতি আছে। একজন বিশ্বাসী মানুষ পার্থিব জীবনে পরকালীন সে জীবনের জন্য প্রস্তুত হয়। কেননা মৃত্যু অপরিহার্য এবং পরকালীন মুক্তিই সাফল্যের মাপকাঠি। ইরশাদ হয়েছে, ‘জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করবে। কিয়ামতের দিন তোমাদের কর্মফল তোমাদের পরিপূর্ণভাবে আদায় করা হবে। যাকে জাহান্নামের আগুন থেকে দূরে রাখা হয়েছে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সে-ই সফলকাম। পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ছাড়া কিছুই না।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৮৫।
জীবনটা খুবই ছোট, আমার মনে হয় প্রত্যেকটা মুহূর্ত উপভোগ করা উচিত। যখন যেটা ভালো লাগে তখন সেটা করা উচিত। সব সময় পরে করবো পরে করবো বলে আমরা অনেক কিছুই করি না। অনেক ইচ্ছা থাকে সেগুলো পূরণ করা হয় না।
মানব জীবন বড়ই বিচিত্র। প্রত্যাশা প্রাপ্তির বিষয়গুলো বেশ জটিল। কার জীবনে কখন কীভাবে কী ঘটবে সেটা একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কেউ বলতে পারে না। সব সময় যোগ্যতা দক্ষতা আর অভিজ্ঞতা দিয়ে জীবনের সব প্রাপ্তি অর্জন সম্ভব নয়, চেষ্টা করলে মানুষ সব কিছু অর্জন করতে পারে না। তারপরও চেষ্টা করতেই হয়, সব গ্লানিকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যেতে হয় বীরদর্পে। তবেই মিলবে জীবনের সার্থকতা।
আজ জীবনের অনেক গুলো সময় অতিবাহিত করে মনে হয়, জীবন জীবনের গতিতে অবিরত চলছে। সে নির্দেশিত পথ চিনে না, শুধু জানে তার নির্ধারিত গন্তব্য। আমি না চাইলেও জীবন ঠিক পৌঁছে যাবে সময়ের নৌকোয় ভেসে তার কাঙ্খিত গন্তব্যে। আমি জানিনা সে পথচলা কবে, কখন, কোথায় স্থিরতা পাবে। হয় তো কেউ জানে না কার চলা কোথায় শেষ হবে। বড় বিচিত্র জীবন চক্র, কখন ফোরাবে এ নিত্য আসা যাওয়া তা আল্লাহ ভালো জানেন।
সাংবাদিক ও কলামিস্ট: জাহাঙ্গীর আলম
ব্যুরো প্রধান চট্টগ্রাম-
আজকের বিজনেস বাংলাদেশ
নির্বাহী সম্পাদক-
দুর্জয় বাংলা
রেলওয়ে জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন
সদস্য-চট্টগ্রাম রিপোটার্স ফোরাম।
আরও পড়ুনঃ সংবাদ প্রকাশের জেরে দুই সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি