
দুর্গাপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হামলা, ৩ নারী সহ আহত-৭
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হামলায় ৩ জন নারী সহ মোট ৭ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে সোমবার দুপুরে ৪ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে রবিবার(৩০জুন) রাতে গৌরাখালীকান্দা গ্রামের দুদু মিয়া ১৮ জনকে অভিযুক্ত করে দুর্গাপুর থানায় একটি অভিযোগ করেন। এর আগে ওই দিন সকালে উপজেলার গৌরাখালীকান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তরা হলেন গৌরাখালীকান্দা গ্রামের ১। উসমান গণি (৫০) ২। রাজ্জাক মিয়া (৩২) ৩। মোঃ কাজল মিয়া (৪০), পিতা- সোনালী, ৪। সাইদুল ইসলাম (৩৫) ৫। কবিরুল ইসলাম (২৬), ৬। শাহীন মিয়া (২৮), পিতা- গিয়াস উদ্দিন, ৭। জামির হোসেন (৩৫) ৮। চাঁন মিয়া (৫৫) ৯। রুবেল মিয়া (২৮), ১০। আল আমিন (২৫)১১। মোতালেব মিয়া ১২। লাল মিয়া (৫০), পিতা- মৃত সোনালী, ১৩। রেজাউল (২২) ১৪। গিয়াস উদ্দিন (৫৫), ১৫। ছানি মিয়া (২২),১৬। নাকিব মিয়া (২১) ১৭। গোলাম মোস্তফা (৫৫) ১৮। শাজাহান মিয়া (৩৪)।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গৌরাখালীকান্দা গ্রামের দুদু মিয়ার সাথে অভিযুক্তদের বিরোধ চলে আসছিল৷ গত ২৯ জুন ৪ জন ইউপি সদস্য ও এলাকার গন্যমান্য লোকজনের উপস্থিতিতে জায়গার বিষয়টি নিয়ে শালিশ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ঐ দিন রাতেদুদু মিয়ার সাথে অভিযুক্ত উসমান গণি, কাজল মিয়া, সাইদুল ইসলাম, চাঁন মিয়া, ও মোতালেব মিয়ার জমির বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করিয়া রবিবার(৩০জুন) সকাল সাড়ে ৮টার সময় অভিযুক্ত সবাই দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি-সোটা নিয়ে দুদু মিয়ার বাড়িতে প্রবেশ করে বাড়ীর লোকজনদেরকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকে৷ এ সময় তোতা মিয়া অভিযুক্তদের গালমন্দ করার নিষেধ করলে অভিযুক্ত রাজ্জাক প্রাণনাশের হুমকি দেই।
এ সময় অভিযুক্ত উসমান গনি ধারালো দা দিয়ে তোতা মিয়ার মাথায় আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। ওই সময় মোছাঃ ছুলেমা বেগম তোতা মিয়াকে অভিযুক্তদের হাত থেকে উদ্ধার করতে গেলে অভিযুক্ত কাজল মিয়া তাঁকেও ধারালো দা দিয়ে মাথায় আঘাত করে। ওই সময় অভিযুক্ত চাঁন মিয়া
ছুলেমা বেগম এরগলায় থাকা ১০ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন যার দাম ৮০ হাজার টাকা ও ০৪ (চার) আনা ওজনের স্বর্ণের কানের দুল যার দাম ৩০ হাজার টাকা কৌশলে ছিনিয়ে নেয়।
এ সময় ছুলেমার ডাকচিৎকার শুনে আনোয়ারা বেগম আসলে অভিযুক্ত সাইদুল লোহার রড দিয়ে তাঁকে আঘাত করে। পরে অভিযুক্ত রুবেল মিয়া আনোয়ারা বেগম এর গলায় থাকা ০৮ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন যার দাম ৬০ হাজার টাকা ও ০৪ আনা ওজনের কানের দুল মুল্য যার দাম ৩০ হাজার টাকা কৌশলে টান দিয়ে নিয়ে নেয়। এসময় অভিযুক্তদের হামলায় আরো আহত হয় মোছা রাজিয়া খাতুন, সজিব, আরিফ মিয়া ও সোহেল মিয়া । অভিযুক্ত আল আমিন রাজিয়া খাতুনের গলায় থাকা ৮ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন টান দিয়ে নিয়ে যাই যার দাম ৬০ হাজার টাকা।
অভিযুক্তরা দুদু মিয়ার ঘরে প্রবেশ করে সুকেস এর ড্রয়ারের তালা ভেঙ্গে ড্রয়ারে রাখা গরু ও অটো গাড়ি বিক্রির ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা নিয়ে যাই। অভিযুক্তরা লোহার রড ও লাঠিসোটা দিয়ে বসতঘর ও রান্না ঘরের বেড়া ভাংচুর করে ৩০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। আহতদের ডাক চিৎকারে
আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।
অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাই। হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আহত সকলকে চিকিৎসা দেই৷ এরপর ৪ জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে প্রেরন ও ৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি রাখে৷ দুদু মিয়া থানা পুলিশের মাধ্যমে অভিযুক্তদের বিচার দাবি করেন ।
এ ব্যাপারে দুর্গাপুর থানার তদন্ত ওসি মাহফুজ আলম বলেন, দুদু মিয়া থানায় একটি অভিযোগ করেছে। অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুরে রাস্তা নির্মাণে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
কলি হাসান