
কাজী রফিকুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পৌরশহরের আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী রফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে শরীরচর্চা শিক্ষক থেকে জাল সার্টিফিকেটে প্রধান শিক্ষককের দায়িত্ব পালন করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তখনকার বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের কয়েকজন প্রভাশালী সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদেরকে ম্যানেজ করেই দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে তিনি এম এড এর জাল সার্টিফিকেটে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদটি দখল করে আছেন। এছাড়াও তিনি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করে মোহনগঞ্জ পৌরশহরে বাড়িসহ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়েছেন বলেও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
বুধবার বিকেলে পৌরশহরের টেঙ্গাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো.মঈন উদ্দিন খান পাঠান ওরফে ইকবাল নামে এক ব্যক্তি বাদি হয়ে প্রধান শিক্ষক কাজী রফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে এমন অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দূর্নীতি দমন কমিশনের ময়মনসিহ বিভাগীয় কার্যালয়ের চেয়ারম্যান বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ অভিযোগের অনুলিপি মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের মহা ব্যবস্থাপক, নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক, মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, মোহনগঞ্জ উপজেলার গাগলাজুর ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের বাসিন্দা কাজী আব্দুল হাসিমের ছেলে কাজী রফিকুর রহমান ২০০৬ সালে নিজ এলাকায় অবস্থিত শ্যামপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে শরীর চর্চা শিক্ষক হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে তিনি এম এডের জাল সার্টিফিকেট দিয়ে মোহনগঞ্জ পৌরশহরের আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে অস্থায়ী ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ওই বিদ্যালয়ে যোগদান করার পর থেকেই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ কমিটির কযেকজন প্রভাবশালী সদস্যকে তখন থেকেই ম্যানেজ করে তিনি গত প্রায় ১৬ বছর ধরে দাপটের সঙ্গে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সুচতুর শিক্ষক কাজী রফিকুর রহমান ওই বিদ্যালযে যোগদান করার পর থেকেই তিনি বিদ্যালযের নামে বরাদ্দকৃত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা, ৪ ট্রাক ভর্তি বিদ্যালযের পুরাতন বই ও খাতা বিক্রিসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে তিনি মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ওই বিদ্যালয়ে যোগদানের আগে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া নিজ এলাকায় মাত্র ৫০ শতক জমির মালিক ছিলেন শিক্ষক কাজী রফিকুর রহমান। কিন্তু বর্তমানে তিনি বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে মোহনগঞ্জ পৌর শহরের নওহাল, টেঙ্গাপাড়া ও কাজিহাটি মৌজায় কয়েক কোটি টাকার জায়গাসহ ভবন ও মার্কেটের মালিক হয়েছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী রফিকুর রহমান বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। মূলত অভিযোগকারী ইকবাল পাঠান এক সময় এ বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সদস্য ছিলেন। তখন তিনি আমার নিকট অনেক অন্যায় আবদার করতেন। কিন্তু তার এসব অন্যায়ের বিষয়ে আমি কখনোই পাত্তা দেইনি বলেই তিনি তখন থেকেই আমার বিরুদ্ধে নানান মিথ্যা অপপ্রচার ও অভিযোগ করে আসছেন।
এ ব্যাপারে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজওয়ান কবিরের ব্যবহৃত ০১৭৮৭-৪৪২৪৫৪ নাম্বার সরকারি মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও ফোনটি বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: নেত্রকোনা জেলার শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিকা হলেন নুরুন্নাহার বেগম
হাফিজুর রহমান চয়ন