লাবণ্যময়ী হেমন্ত
অপূর্ব মহিমা লাবণ্যময়ী হেমন্ত আহ্বানে-
বিহঙ্গরা উড়ে দেখো মেঘবালিকার সনে
ঘাস ফড়িং খেলা করে সবুজ সমারোহে
হেমন্তের শিশির হিম গায়ে মেখে।
যত দূরে চোখ যায় হলুদ বর্ণে পাক ধরেছে ধানে-
কার্তিকে ফসলের মাঠে যেন কৃষকই হাসে
নির্মল পরিতৃপ্ত মনে তারা গৃহে ধান তুলে আনে
শিশিরের সচ্ছ ফোঁটায় যেন শিশুরা হাসে।
কৃষকের বিন্দু-বিন্দু মোহনীয় ঘামে-
সোনালী ফলস ফলে মাঠে-মাঠে
স্মৃতির আকড়ে গিন্নী শত-শত ইতিহাস বুনে!
যুগল ছায়ায় প্রবৃত্তে ভালোবাসা হাসে
ভাঙ্গা গড়ার খেলায় স্বচ্ছ ছবি আঁকে।
তরু তৃর্ণলতায় নিটোল নিশার নিশির-
নিভৃতে বাংলায় এ সময় হিম ঝেঁকে বসে
নতুন ধানে ঘরে ঘরে সুখের আবেশ
পরম সুখস্মৃতি নিয়ে তারা আনন্দ বিলাসে মাতে।
কুলবধূরা বাবার গৃহে নায়র যায়-
রাস-রসে হেমন্ত নবান্নে মেতে ওঠে সবাই
মৌমাছি মধু লোভে ফুল ফুলে উড়ে
শিশির সিক্ত ডানায় গুনগুনিয়ে ঘুরে বেড়ায়।
হেমন্ত সন্ধ্যায় খলার পাশে ন্যাড়া ক্ষেতে বসে-
আবহমান বাংলার লোক গানের আসর
রাত ধরে চলে জারি-মুর্শিদি গান যাত্রা পালা
মগ্ন স্রোতা যুগ বৃদ্ধ পাড়ার সকলে।
সোনালী ধানে নবান্ন উৎসবে মেতে-
ঘরে ঘরে চলে ফির্নি-পায়েস নানা রকম পিঠার ধুম
নবীন গিন্নী স্বামীর পাতে একে একে দিতেছে সবই
খুশিতে কাপঁছে কাঁকন পড়া হাতটি।
লাবণ্যময়ী হেমন্তের প্রেমে পড়ি বারংবার-
সোনা ঝরা রোদে সোনালী ধানের ঋতু হেমন্তর গাঁথায়
বন্ধু শোন বলি-হেমন্ত কেবলই রসসৃষ্ট জৌলস নয়!
হেমন্ত আমার প্রেম-বিরহ মিলন
রূপসী বাংলার এক অপার বিস্ময়।
আরও পড়ুন: কেন্দুয়ায় ৫০তম গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত