কবি মাহবুবা খান দীপান্বিতার যার পিরিতে কান্দি আমি ছড়া-পদ্যের পাঠ উন্মোচন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
কবি মাহবুবা খান দীপান্বিতার আঞ্চলিক ভাষায় লেখা ছড়া পদ্যের বইয়ের পাঠ উন্মোচন ও আলোচনায় প্রধান আলোচক হিসেবে ৭ মে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর আলোচনা করতে গিয়ে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, লোকজ সাহিত্য সংস্কৃতির চারণ ভূমি কেন্দুয়া। এই কেন্দুয়া উপজেলায় ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে এসে আমি খুবই গর্বিত।
তিনি বলেন, দেড় মাসের অধিক কিছু সময় হয়েছে কেন্দুয়ায়। ইতিমধ্যে তিন দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত জালাল মেলা সহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কাজে কেন্দুয়ার সকল মহলের যে ভালোবাসা ও আন্তরিক সহযোগিতা পেয়েছি তা সারা জীবনেও ভুলতে পারবো না। আমার যদি কোন কারণে এখান থেকে বদলি হয়ে চলে যেতে হয় তবুও আমার কোন আপসোস থাকবেনা।
ইমদাদুল হক তালুকদার আরও বলেন, এখানকার শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষের মন মানসিকতা যে এতো উদার, সহজ সরল হবে, তা কেন্দুয়ায় না আসলে আমি উপলদ্ধীই করতে পারতাম না। এখানে যোগদানের আগে আমাকে অন্যান্য উপজেলায় যোগদানের পরামর্শ দেওয়া হলেও আমি সেদিন কেন্দুয়াকেই বেচে নিয়েছিলাম। আমার সেই বেচে নেওয়াটা কোন মতেই ভুল হয়নি।
বিকেল ৪ টা থেকে শুরু করে রাত ৯ টা পর্যন্ত এখানকার কবি সাহিত্যিগণ কবিতার আসরে বসে আবৃত্তি শুনেন, গান পরিবেশন করলে গান শুনেন, এ বিষয়টা দেখে গর্বে আমার বুক ভরে যায়। কবি মাহবুবা খান দীপান্বিতার আঞ্চলিক ভাষায় লেখা ছড়া পদ্যের বই সেদিন আমাকে উপহার দিতে এসেছিলেন। কিন্তু আমি তাঁর লেখাকে সম্মান জানাতে গিয়ে ২০০ টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছি। শুধু মাত্র কবিকে উৎসাহ ও প্রেরনা দেয়ার জন্য। আমি তাকে আমার মত করে কেন্দুয়ার কবি চন্দ্রাবতী উপাধিতে ভূষিত করেছি।
এখানকার আরও যাঁরা কবি সাহিত্যিক লেখক আছেন তাদের সবার ভালোবাসা ও প্রকাশিত বই আমি পেয়েছি। তাদের বই পড়ে আমি বারবার মুগ্ধ হই, পুলকিত হই এবং আলোকিত হই। পুলিশের পোশাক পড়ে কোন থানার ওসি সাহিত্য সংস্কৃতির অনুষ্ঠানে এসে কবিতা আবৃত্তি করেন এটা আমি খুবই কম দেখেছি। যেটি কেন্দুয়া থানার ওসি এনামুল হক পিপিএম করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরও বলেন, সাহিত্য সংস্কৃতি সেবি ও শিল্পীদের প্রসারের জন্য আমি আমার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব বোধ থেকে সর্বচ্চো চেষ্ঠা চালিয়ে যাব। এতে চাই কেন্দুয়া বাসীর সকল মহলের আন্তরিক সহযোগিতা। চর্চাসাহিত্য আড্ডার সমন্নয়কারী কবি রহমান জীবনের সচ্ছালনায় উপজেলা পরিষদ মিলায়তনে অনুষ্ঠিত পাঠ উন্মোচন ও আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন গীতি কবি মীর্জা রফিকুল হাসান ভান্ডারী।
আলোচক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন সাহিত্যিক গীতিকার কেন্দুয়া উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান মো: নুরুল ইসলাম, থানার ওসি মো: এনামুল হক পিপিএম, বিশিষ্ট ছড়াকার ও লোকসাহিত্য গবেষক জাহাঙ্গীর আলম জাহান, বিশিষ্ট ছড়াকার ও লোকসাহিত্য সংগ্রহক সাংবাদিক সঞ্জয় সরকার, সাহিত্য সংসদের সভাপতি আকম বজলুর রহমান তুলিপ, কবি ও চারণ সাংবাদিক সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, পালা নাট্যকার ও সাংবাদিক রাখাল বিশ্বাস, লেখক ও রাজনীতিক কামরুল হাসান ভূঞা, শিক্ষক নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান জাকির আলম ভূঞা, বিশিষ্ট নাট্য অভিনেতা মো: দিদারুল ইসলাম, শিক্ষক মো: মুখলেছুর রহমান বাঙ্গালী, কবি ও শিক্ষক শাহাবুল কাদির ভূঞা, শিক্ষক সজল কুমার সরকার, লেখক ও নাট্যকার সাদেকুর রহমান রতন, শিক্ষক ও কবি নুসরাত শিলা, শিক্ষক রিম্মী রাণী, রোদসী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও শিক্ষক আঞ্চলিক ভাষায় লেখা ছড়া পদ্যের বই থেকে মনমুগ্ধকর কবিতা আবৃত্তি করেন। মূলত এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, সাংবাদিক, শিক্ষক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের এক মিলনমেলা ছিল চোখে পড়ার মতো।